তৎপর: বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের মধ্যে বাইরে থেকে আসা ট্রাক চালকদের দিয়ে বোল্ডার এনে মেখলিগঞ্জ চলছে তিস্তা সেতু তৈরির কাজ। তাছাড়া করোনা সতর্কতায় সাধারণ মানুষকে যখন ঘরে থাকার কথা বলা হচ্ছে তখন কীভাবে বাইরে থেকে আসা ট্রাক চালকদের দিয়ে বোল্ডার আনা হচ্ছে, এই অভিযোগ এনে মঙ্গলবার বোল্ডার বোঝাই ট্রাক আটকে বিক্ষোভে শামিল হন মেখলিগঞ্জ পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের চূয়ার পাড় এলাকার বাসিন্দারা। আন্দোলন তুলতে গিয়ে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। যদিও লাঠি চার্জের অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা পুলিশের উপরেই হামলা চালানো হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত মেখলিগঞ্জ হলদিবাড়ি তিস্তা নদীর উপর জয়ী সেতুর কাজের বোল্ডার আনাকে কেন্দ্র করে। দেশ জুড়ে লকডাউন চালু হওয়ার পর এই সেতুর কাজও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বর্ষায় কাজের সমস্যা হবে সেই কারণে কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকার পুনরায় কাজ শুরুর অনুমতি মেলে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের পক্ষে আছিরুদ্দিন মহম্মদ জানান, তাঁরা তিস্তা ব্রিজ কনস্ট্রাকশন ডিভিশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, যেসব শ্রমিক এই এলাকাতে রয়েছেন তাঁদের দিয়েই বর্তমানে কাজ হবে। এছাড়া, স্থানীয় চালকদের দিয়েই বোল্ডার আনা হবে। কিন্তু তাঁরা দুদিন থেকে লক্ষ্য করছেন, বাইরে থেকে আসা ট্রাক চালকদের দিয়ে বোল্ডার আনা হচ্ছে। করোনা সতর্কতার মধ্যে বাইরে থেকে ট্রাক চালকদের নিয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হর্ষবর্ধন রায় জানান,করোনা সতর্কতায় দেশ জুড়ে লকডাউন চলছে। তার মধ্যে কীভাবে বাইরের ট্রাকচালকদের দিয়ে বোল্ডার আনা হচ্ছে এলাকায়। তাছাড়া, ট্রাকে বোল্ডার আনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সুরক্ষার কথা ভাবা হচ্ছে না। এমনকি ট্রাকগুলোকেও জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না। তাছাড়া করোনা সতর্কতায় সাধারণ মানুষ যখন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে পারছেন না। এছাড়া বাইরে থেকে আসা লোকজনকে কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে, তখন কীভাবে বাইরে থেকে আসা এই ট্রাকচালকদের দিয়ে বোল্ডার আনা হচ্ছে।
স্থানীয়দের আন্দোলনের জেরে এ দিন বেশ কয়েকটি ট্রাক আটকে পড়ে। ঘটনার খবর এলাকায় পৌছায় মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ। আন্দোলন তুলতে পুলিশ আন্দোলন কারীদের ব্যাপক লাঠিচার্জ করে এবং এতে কয়েকজন জখমও হন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।পরে এলাকার মহিলারা দল বেঁধে পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে এলাকা রনক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বাধ্য হয়ে পুলিশ পিছু হটে।
এ দিনের ঘটনা নিয়ে মেখলিগঞ্জ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সিদ্ধার্থ দর্জিকে প্রশ্ন করা হলে পুলিশের লাঠিচার্জের বিষয়টি তিনি মানতে চাননি। উল্টে আন্দোলনকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয় এবং এই ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান। অন্যদিকে তিস্তা ব্রিজ কনস্ট্রাকশন ডিভিশনের তরফে বাইরে থেকে ট্রাকচালক আসার অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)