প্রতীকী ছবি
পাতা তোলার অনুমতি পেয়েও যেন শ্বাসকষ্ট ভুগছিল চা শিল্প। পাতা তুলে চা তৈরির পরে বাজারে পৌঁছে দেওয়ার উপায় ছিল না। চা নিলাম বন্ধ, পরিবহণে বিধিনিষেধে কারখানার কাঁচামালেরও অভাব হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা জারি করে বুধবার দিন জানিয়ে দিল, ২০ এপ্রিল থেকে চা শিল্প সংক্রান্ত এবং পরিপূরক-অনুসারী শিল্প ক্ষেত্রেও একাধিক ছাড় রয়েছে। তার জেরে চা শিল্পের ওপর ঘনীভূত সঙ্কটের অনেকটাই লাঘব হতে চলেছে বলে দাবি চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার। যদিও বুধবার বিকেল পর্যন্ত রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা আসেনি। কাজেই এ রাজ্যে ছাড় কতটা বলবত হবে তা নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি।
চা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন দেখা গিয়েছে লকডাউনেও। চা-কে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য সামগ্রীর তালিকাভুক্ত করে পাতা তোলায় ছাড় দিয়েছিল কেন্দ্র। যদিও রাজ্য সেই ছাড় এখানকার চা বাগানে চালু করেনি। কাজেই কেরল, তামিলনাড়ু, অসমে চা পাতা তোলার কাজ চলতে থাকলেও এ রাজ্যে তা হয়নি। কেন্দ্র চা বাগানে একসঙ্গে ৫০% শ্রমিককে কাজে যাওয়ার অনুমতি দিলেও রাজ্য প্রথমে দিয়েছিল মাত্র ১৫%। তা-ও পাতা তুলতে নয়, শুধু কীটনাশক ছড়াতে। শনিবার নবান্ন পাতা তোলার অনুমতি দেয়। কাজে শ্রমিক সংখ্যা ২৫% করে। এ দিন কেন্দ্রের নির্দেশে ফের বলা হয়েছে, ৫০% শ্রমিককে একসঙ্গে কাজে লাগানো যাবে। চা মালিকদের সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ কনসালটেটিভ কমিটি অব প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “আশা করব এ রাজ্যেও ৫০% শ্রমিক দিয়ে কাজের অনুমতি মিলবে।”
চা পাতা তোলা শুরু হলেও চায়ে সঙ্কট কাটেনি। একেই সপ্তাহদুয়েক বাগান বন্ধ থাকায় পাতা লম্বা হয়ে গিয়েছে। সেগুলি তো বাদই। যে পাতা চা বানানোর যোগ্য, সেগুলিও অল্প শ্রমিকদের দিয়ে তোলা সম্ভব হচ্ছিল না বলে বাগান কর্তৃপক্ষের দাবি।
এক চা বাগান ম্যানেজারের কথায়, “পাতা তুলে চা পাতা না হয় তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু তার পর? বাজারে নিয়ে যাওয়ার উপায় তো ছিল না। কারখানায় জ্বালানির অভাবও হচ্ছিল যথেষ্ট।”
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে, তাতে চা-কে প্যাকেটবন্দি করা থেকে বিক্রি, সবেরই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিক্রির অনুমতি দেওয়ায় চা নিলাম কেন্দ্রগুলির দরজাও খুলতে চলেছে বলে দাবি সংস্থাগুলির। ট্রাক চলাচল, রেলে বুকিং করার অনুমতি, কীটনাশক এবং চা বাগিচার প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশের দোকানও খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। বহু চা বাগানে কয়লার প্রয়োজন হয়। কয়লা উৎপাদন এবং বিলি বণ্টনেও ছাড় দেওয়া হয়েছে এ দিনের নির্দেশিকায়।