প্রতীকী ছবি
পুলিশের উপর আক্রমণ ও গাড়ি জ্বালানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হল বুধবার। এবং এই ঘটনায় ফের একবার উত্তেজনা ছড়াল শালকুমারের প্রধানপাড়ায়।
মঙ্গলবার রাতভর তোর্সা নদীর চর লাগোয়া ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ১৮ জনকে। তবে অভিযানের সময় পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকায় পাল্টা তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরাও। তাঁদের অভিযোগ, সেই তাণ্ডবের হাত থেকে বাদ পড়েননি মহিলারাও।
এমনকি, পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে। যে ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ শাসক দলের স্থানীয় নেতারা। আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ কর্তারা অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
তপসিখাতায় করোনা হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া এক বৃদ্ধের শেষকৃত্য ঘিরে গত রবিবার রাতে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শালকুমারের প্রধানপাড়া। ওই ঘটনায় মাদারিহাট থানা ও সোনাপুর ফাঁড়ির দুই ওসি-সহ ২২ জন পুলিশকর্মী জখম হন। পুলিশের তিনটি গাড়ি ও বাস ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় একটি মাটি কাটার যন্ত্রেও।
সূত্রের খবর, তোর্সার চরে করোনার সারি হাসপাতালের মৃতদের শেষকৃত্য করার সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু থেকেই বিরোধিতা করছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কারও কারও কথায়, রবিবারের ঘটনার পর পুলিশকর্তারাও বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাঁদের শান্ত থাকারও আহ্বান জানিয়েছিলেন ওই পুলিশকর্তারা। সেইসঙ্গে এলাকার একমাত্র পুলিশ ক্যাম্পটিও তুলে নেওয়া হয়েছিল।
এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর রাতে নিশ্চিন্তেই বাড়ি ফেরেন। কিন্তু মাঝরাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে ঢুকেই ধরপাকড় শুরু করে। পুলিশের অভিযোগ, ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালানোর সময়ও তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। তখন তাদেরকেও খানিকটা বলপ্রয়োগ করতে হয়। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ১৮ জনকে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝরাতে পুলিশ গ্রামে তাণ্ডব চালায়। বাড়ি বাড়ি ভাঙচুর চালায়। মারধর করা হয় মহিলাদের।
ক্ষুব্ধ স্থানীয় শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বাবুল কার্জি বলেন, “রবিবার সাধারণ মানুষের কেউ মূর্খতা দেখিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশও সেই একই মূর্খতা দেখাল। দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বকে গোটা বিষয়টি আমরা জানিয়েছি।”
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “পুলিশের উপর আক্রমণ ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল। ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করা হয়। তবে সেখানে আর কিছু হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখেই বলতে পারব।”
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “আইন আইনের পথেই চলবে। তবে নিরাপরাধ কেউ যাতে শাস্তি না পায়, সেটাও পুলিশকে দেখতে হবে।”