প্রতীকী ছবি।
ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বাড়ির লোকেদেরকে রোগীর সম্বন্ধে তথ্য জানানোর ব্যবস্থা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত করোনা রোগীদের শারীরিক পরিস্থিতির তথ্য ‘কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে’ আপলোড করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। লড়াইটা করোনার বিরুদ্ধে হলেও, কোভিড হাসপাতালের ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যা মেটানোর ‘ওষুধ’ খুঁজে বের করতেই এখন নাজেহাল অবস্থা আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য কর্তাদের।
তাঁদের একাংশের অভিযোগ, সমস্যার কথা জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের বহুবার বলা হয়েছে। মোবাইল ফোন সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা মিটছে না। উল্টে বেড়েই চলছে। যদিও জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, “কোভিড হাসপাতালে ইন্টারনেট ঠিক ভাবেই কাজ করছে।” তবে জেলার স্বাস্থ্যকর্তা থেকে শুরু করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, শুরু থেকেই তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে তাঁদের চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শুরুতে যে ‘ব্রডব্যান্ড’ সংযোগ ছিল, তাতে সমস্যা শুরুর পর সেখানে একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার টাওয়ার বসানো হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি।
এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের শারীরিক অবস্থার তথ্য তাঁদের পরিজনেরা যাতে নিজ নিজ ব্লকে বসেই পেয়ে যান, সেজন্য কোভিড হাসপাতাল থেকে প্রতি গ্রামীণ হাসপাতালকে সংযোগ করে ভিডিয়ো কলের ব্যবস্থা করা হয়। ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে প্রিয়জনদের খোঁজ নিতে প্রতিদিনই গ্রামীণ হাসপাতালগুলোয় ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু অভিযোগ, অনেকদিনই তাঁদেরকে শুধুমাত্র মনিটরের কালো পর্দা দেখেই বাড়ি ফিরে যেতে হয়।
জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, ‘‘কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের তথ্য এক ক্লিকেই যাতে জানা যায়, সেজন্য রাজ্য নয়া পদ্ধতি চালু করেছে। কয়েকটি জায়গায় তা চালুও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যার জন্য বেশিরভাগ দিনই তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালে বসে রোগীদের যাবতীয় তথ্য সেই সিস্টেমে আপলোড করতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। বাধ্য হয়ে যাবতীয় তথ্য নিয়ে আলিপুরদুয়ার শহরে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে এসে তা আপলোড করছেন তাঁরা।’’
ওই স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ‘‘শুরু থেকেই আমরা কোভিড হাসপাতালে রোগীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করিনি। কিন্তু নেটওয়ার্কের অভাবে হাসপাতালে বেশিরভাগ সময়ই চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেই মোবাইলে যোগাযোগ অসম্ভব হয়ে পড়ে। খুব জরুরি হলে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে আমাদের ফোন করেন।’’
আলিপুরদুয়ারের বিদায়ী ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “কোভিড হাসপাতালে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের সমস্যা সমাধানে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”