শিকেয়: মাস্ক ছাড়াই ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় বালুরঘাটের আনাজ বাজারে। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি হাটে বাজার করতে গিয়েছিলেন হেমতাবাদের সমাসপুর এলাকার বাসিন্দা ভবনী বর্মণ। মুখে মাস্ক ছিল না। তখন তিনি হাটের একটি আনাজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। আলু কিনছেন। তাঁর আশপাশ দিয়ে মাস্কহীন অবস্থায় হেঁটে চলেছেন আরও অনেকে। হাটের বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর মুখেও মাস্ক নেই। ভবানী বলেন, “শ্বাসকষ্টের জন্য মাস্ক খুলে পকেটে রেখেছি।” শুধু উত্তর দিনাজপুরের অন্যতম বড় হাট কমলাবাড়ি-ই নয়, উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার হাটগুলিতে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
রায়গঞ্জ মেডিক্যালের চিকিৎসক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাসিন্দারা মাস্ক পরার ব্যাপারে সচেতন না হলে করোনার তৃতীয় ঢেউ সামাল দেওয়া মুশকিল হবে।” ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদারের দাবি, প্রশাসনের তরফে মাস্ক পরার ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। অভিযানও হবে।
উপচে পড়া ভিড় কি শুধু এক জায়গায়? বেশ কিছু দিন ধরে মালদহের আটমাইল, গাজলের আলমপুর ও কালিয়াচকের শাহবানচকের হাটে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এবং সেখানে বেশিরভাগ বাসিন্দার মুখেই মাস্ক দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি। দক্ষিণ দিনাজপুরের পাগলিগঞ্জ, জলঘর, বালুরঘাট, হিলি, বুনিয়াদপুর, কুশমন্ডির মতো জায়গায় হাটগুলিতেও একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘খুব শীঘ্রই জেলার হাটগুলিতে মাস্কহীন বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালু
করা হবে।’’
উত্তরবঙ্গের অন্য প্রান্তেও কিন্তু ছবিটা আলাদা নয়। তা সে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার বা শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকাই হোক না কেন। আলিপুরদুয়ারের বহু হাটে মাস্কহীন ক্রেতা এবং থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখা ক্রেতার ছড়াছড়ি। একই ছবি কোচবিহারের নিশিগঞ্জের হাট বা অসম সংলগ্ন বক্সীরহাটে। আবার জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলিতেও মাস্কের ব্যবহার বিশেষ দেখা যায় না। যেমন দেখা যায় না শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, রানিডাঙার মতো এলাকাতেও।
ব্যতিক্রম শুধু মালবাজার, পাহাড় এবং চা বাগানের কিছু এলাকা।
কেন এই তফাত? মালবাজারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে সংক্রমণ হয়েছিল, তার পর থেকে অনেকেই সচেতন হয়েছেন। একই কথা বলা যায় পাহাড়ের ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন আফসোস করেন, এই সব এলাকার মতো কেন অন্য জায়গায় মানুষ সচেতন হচ্ছে না? না হলে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে আগামীতে।