West Bengal Assembly Election 2021

এল না কেউ, আক্রান্তকে বাঁচালেন স্বাস্থ্যকর্তারা

বাড়িতে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ তাঁর ৭০ বছরের সংক্রমিত স্ত্রীকে নিয়ে একা থাকলেও সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

মানিকচক শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

পাশে: সংক্রমিত রোগীকে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

স্ট্রেচারের একপাশে এ এন এম এবংা এক রোগী সহায়ক। অন্য প্রান্তে, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। করোনা সংক্রমিত অসহায় বৃদ্ধাকে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুল্যান্সে তুললেন তাঁরাই। শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য আধিকারিক, কর্মীদের মানবিক মুখ দেখল মালদহের মানিকচকবাসী। অভিযোগ, সংক্রমিত পরিবার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পাড়া পড়শি থেকে পরিবারও। তাঁদের সামনে মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের ‘টিমে’র কাজকেই তুলে ধরে সচেতনতা প্রচারে নামছে দফতর।

Advertisement

এদিন অমানবিকতার চূড়ান্ত ছবি দেখা যায়, মানিকচকের কামালপুর গ্রামে। অভিযোগ, বাড়িতে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ তাঁর ৭০ বছরের সংক্রমিত স্ত্রীকে নিয়ে একা থাকলেও সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে সংক্রমিত বৃদ্ধাকে তুলতেও এগিয়ে আসেননি কেউই। এমন অবস্থায় ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ায় স্বাস্থ্য দফতর। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হেম নারায়ণ ঝাঁ, এ এন এম মিঠু চৌধুরী, রোগী সহায়ক সৌরভ প্রামাণিক এবং চালক শঙ্কর মণ্ডল নিজেরাই স্ট্রেচারে করে রোগীকে তুলে দেন অ্যাম্বুল্যান্সে।

হেম নারায়ণ বলেন, ‘‘গ্লাভস, মাস্ক পরে সংক্রমিত রোগীকে আমরা অ্যাম্বুল্যান্সে করে মেডিক্যালে পাঠিয়েছি। পরে মহিলার বৃদ্ধ স্বামীকেও আমরা হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’’ তিনি এও বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ এগিয়ে এলে আরও দু’ঘণ্টা আগেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা যেত। এখানে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করে রোগীর পাশে দাঁড়াতে হবে সবাইকে। তবেই হারানো যাবে করোনাকে।’’ মিঠু বলেন, ‘‘আমার একার পক্ষে স্ট্রেচারে করে মহিলাকে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠানো সম্ভব ছিল না। গ্রামের মানুষদের ডেকেও পাইনি। বিএমওএইচ স্যর নিজে মোটরবাইক নিয়ে গ্রামে গিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’

Advertisement

শুধু গ্রামেই নয়, এমনই ঘটনা শহর এলাকাতেও ঘটছে বলে অভিযোগ। সংক্রমিত হলেই রোগীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পাড়া পড়শি থেকে শুরু করে পরিবাররে একাংশও। ফলে ওষুধটুকুও বাড়িতে পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শহরের বাসিন্দা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য তমাল কৃষ্ণ বসাক বলেন, ‘‘সংক্রমিত পরিবারের বাড়িতে আমরা ওষুধ, বাজার পৌঁছে দিচ্ছি। অক্সিমিটার দিয়ে শরীরে রোগীর অক্সিজেনও মেপে দিচ্ছি। অনেক বাড়িতেই একাধিক সংক্রমিত রোগী থাকছেন। কাউকেই তাঁরা পাশে পাচ্ছেন না।’’

মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অসচেতনতার কারণে অনেকেই সংক্রমিতদের রেখে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সাবধানতা অবলম্বন করে সংক্রমিত পরিবারের সবাইকে পাশে থাকতে হবে।’’ সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হবে বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement