প্রতীকী ছবি।
৭ দিন ডিউটি, ১৪ দিন কোয়রান্টিন
নিজস্ব সংবাদদাতা আলিপুরদুয়ার
করোনা সংক্রমণ রুখতে এ বার বেশ কিছু পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য দফতর। করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে কোনও রোগীর চিকিৎসা করতে হলে ঘড়ি ও মোবাইল ছাড়াই হাসপাতালে ঢুকতে হবে চিকিৎসক ও নার্সদের। এমনকি কোভিড হাসপাতালে টানা সাত দিন ডিউটির পরে ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে যেতে হবে তাঁদের। এ জন্য জেলার বিভিন্ন জায়গায় হোটেল ও রির্সট অধিগ্রহণের কাজও শুরু করে দিয়েছে আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতালকে প্রস্তুত করে ফেলা হয়েছে। এখন থেকে সন্দেহজনক কোনও রোগীর সন্ধান মিললেই তাঁকে ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বদলে আয়ুষ হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আচমকা বেড়ে যাওয়ার পরে গত মার্চ মাসের গোড়াতেই ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে খোলা হয় আইসোলেশন ওয়ার্ড। সেখানে দশ বেডের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটও চালু হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে নবান্ন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতালকে কোভিড বা করোনা হাসপাতাল করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই ওই হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করার কাজ শুরু হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসাবে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। সেখানে শয্যাসংখ্যা পঁচিশ থেকে বাড়িয়ে ১১০টি করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ছয়টি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “এই মুহূর্তে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতাল সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ফলে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে কোনও রোগীর সন্ধান মিললে তাঁকে ফালাকাটার বদলে এই হাসপাতালেই ভর্তি করা হবে।”
আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতালে করোনা সন্দেহে কতজন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তার উপর ভিত্তি করে রোটেশন অনুযায়ী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেখানে ডিউটিতে পাঠানো হবে। বিভিন্ন হোটেল বা রিসর্টে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হবে। যেখান থেকে বিশেষ পোশাক পরে বাসে চেপে হাসপাতালে ডিউটিতে যাবেন তাঁরা। পরবর্তীতে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সেজন্য ডিউটিতে যাওয়ার সময়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মোবাইল ও ঘড়ি ছাড়াই হাসপাতালে যাবেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেলার বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু হোটেল ও রিসর্ট সাময়িক ভাবে অধিগ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য টানা সাতদিন ডিউটির পরে চিকিৎসক ও নার্সেরা ওই হোটেল বা রিসর্টে ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকবেন। গোটা বিশ্বেই এই পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে।”