প্রতীকী ছবি
আবহাওয়ার জন্য একদফায় স্থগিত হওয়ার পর আগামী সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনদিনের জন্য শিলিগুড়ি সফরে আসার কথা রয়েছে। প্রতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সফরের অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে থেকে শুরু হয় বৈঠকস্থল, যাত্রাপথ, বাংলোর কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারি। এ বার নতুন সংযোজন করোনা পরীক্ষা। পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের কাজে সরাসরি নিযুক্ত অফিসার, কর্মীদের কোভিড টেস্ট করা হবে।
সরকারি সূত্রের খবর, পুলিশ, গোয়েন্দা দফতর, প্রশাসন থেকে গাড়ি, বাংলোর সব অফিসার, কর্মীদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে টেস্টের আলাদা করে এই প্রক্রিয়া চলছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের তরফে স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে টেস্টের কাজের তদারকি হচ্ছে। অন্তত ১০০ জনকে এই টেস্ট করানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ঠিক ৭২ ঘণ্টা আগে করা এই কোভিড টেস্টের রিপোর্ট দেখে কর্মীদের আগামী সোমবার কাজে যুক্ত করা হবে। রাজ্য প্রশাসনের উত্তরকন্যার এক কর্তা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি যেতে পারেন বা সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা যাদের সবচেয়ে বেশি তাঁদের টেস্ট বাধ্যতামূলক।
সব ঠিক থাকলে ২৮ সেপ্টেম্বর বিকালে মুখ্যমন্ত্রী বিমানে কলকাতা থেকে বাগডোগরা আসবেন। পরেরদিন, ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কোচবিহার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রতিবারের মত উত্তরকন্যার ভিতরে চারদিক ঢাকা প্যান্ডেল করে বৈঠকের ব্যবস্থা হচ্ছে না। উত্তরকন্যার অডিটোরিয়ামে বৈঠক হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রতি জেলা থেকে জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার (শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার) ছাড়া একেবারেই হাতেগোনা জেলার বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের ডাকা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে একেবারেই ভিড় এড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের মাত্র কয়েকজন অফিসার থাকবেন। বাকিদের সামনে, পাশে দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হবে। বৈঠক করা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী তিনদিন থাকবেন কন্যাশ্রী বাংলোতে।
এই পুরো প্রক্রিয়াতে স্থানীয় থানার পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানেরা, রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের একাধিক টিম, কমিশনারেটের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত স্পেশাল সিকিউরিটি ইউনিটের (এসএসইউ) অফিসারেরা থাকছেন। এ বাইরে অডিটোরিয়াম, কন্যাশ্রী বাংলোর রান্নাঘর, রক্ষণাবেক্ষণ, পূর্ত, বিদ্যুৎ, দমকল, গাড়ির চালকেরা, হাউস গার্ড ছাড়াও সাধারণ প্রশাসনের কর্তা, অফিসারেরা আছেন। তেমনিই আছেন, উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয়ের অফিসারেরা। আজ, শনিবার থেকে যারা বাংলো, গাড়ি, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস, অডিটোরিয়ামের দেখভাল করবেন তাঁদের সকলের টেস্ট হচ্ছে। কারও পজিটিভ এলে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নেওয়ার আলাদা তালিকা তৈরি রয়েছে। প্রথমেই বিপুল সংখ্যক কর্মীদের বাছাই করে তালিকা তৈরি করে লোকজন প্রয়োজন মত কমানো হয়েছে। তার পরে তালিকা তৈরি করে টেস্ট করানো হচ্ছে।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে স্যাম্পেল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠিয়ে রবিবারের আগেই প্রত্যেক কর্মীর টেস্ট রিপোর্ট দেখে কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা জানান, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা আধিকারিকেরা স্বাস্থ্যের দিকটাও খেয়াল রাখছেন। স্বাস্থ্য দফতরের টেস্ট রিপোর্ট এবং এসএসইউ-র ছাড়পত্র ছাড়া কাউকে রবিবার থেকে উত্তরকন্যার ভিতরে ঢোকার অনুমতিই দেওয়া হবে না।