প্রতীকী ছবি।
করোনার সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন দুই মহিলার মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। এ দিন নতুন করে আক্রান্তও হয়েছে একাধিক বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি শহরেও মিলেছে নতুন আক্রান্ত। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক নার্সের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তিনি আইসোলেশন ওয়ার্ডে কাজ করতেন বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে দু’জনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে ৫৭ বছরের এক মহিলা রয়েছেন, তাঁর বাড়ি নকশালবাড়ির বাগডোগরার রানিডাঙা এলাকায়। আগের দিনই তাঁর লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। রিকুতে মৃত আর এক জন শিলিগুড়ির বিধাননগরের শান্তিপাড়া এলাকার ৭৮ বছরের বাসিন্দা। এ দিন মারা যাওয়ার পর তাঁর লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা সন্দেহে অন্তত ২১ জন ভর্তি রয়েছেন। তিনটি আইসোলেশন, রিকু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ওই রোগীরা। তাঁদের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ২৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পরেছে। তার মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভার ওয়ার্ডগুলোতে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি এক রোগীর শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। তাঁকে এ দিন কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুর এলাকা বাদে শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন ব্লক এবং দার্জিলিং জেলার পাহাড় মিলিয়ে নতুন করে আরও ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত বলে রিপোর্ট এসেছে। তার মধ্যে ২৭ জন মাটিগাড়া, ১৮ জন নকশালবাড়ির বাসিন্দা। নকশালবাড়িতে যারা আক্রান্ত তাঁদের মধ্যে ৮ জন বেঙডুবি সেনা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন খড়িবাড়ির এবং ১ জন ফাঁসিদেওয়ার। ফাঁসিদেওয়ার আক্রান্ত ওই মহিলাই এদিন মারা গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। পাহাড়ে দার্জিলিং শহরে ৯ জনের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ মিলেছে। নতুন আক্রান্ত তিন জন রয়েছেন সুখিয়াপোখরিতে। তাকদা এবং ফুলবাজার এলাকায় এক জন করে সংক্রমিত হয়েছেন বলে এদিন রিপোর্ট মিলেছে। চারজন আক্রান্ত হয়েছে সুকনা এলাকার বাসিন্দা। পাহাড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় জিটিএ কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন জলপাইগুড়ি শহরে এ দিন নতুন করে চারজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এর জেরে শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৮৯ জন। সোমবার জলপাইগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা যৌথ উদ্যোগে ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট’ ক্যাম্প হয়েছিল। সেখানে শতাধিক বাসিন্দা পরীক্ষা করান। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মঙ্গলবার তাঁদের মধ্যে চার জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
পুর কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুকুর পাড়ের এক বাসিন্দা, করলা পাড়ের এক বাসিন্দা ও ক্লাব রোডের এক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আরও এক বাসিন্দার খোঁজ করছে পুরসভা। সোমবার ক্লাব রোডের এক হোটেলের দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বাড়ি শহরের বড় পোস্ট অফিস মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উপরে। সেই বাড়ি ও এলাকা জীবাণুমুক্ত করে কন্টেনমেন্ট জ়োন করেছে পুরসভা। ওই ব্যাঙ্ক সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ।