ফাইল চিত্র।
পুজোর সময় পঞ্চমী থেকে দশমী, এই ৬ দিনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ১০১ জন রোগী মারা গিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ফি বছরই পুজোর দিনগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে মেলে না বলে অভিযোগ। এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। অথচ তার পরেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসকদের অনেকেই পুজোর দিনগুলিতে হাসপাতালে কাজের সময় উপস্থিত ছিলেন না বলে রোগীর পরিবারের অভিযোগ। অনেকে আবার এক ঘণ্টার জন্য রাউন্ড দিয়েই চলে গিয়েছেন বলে দাবি অনেকের। এর ফলে চিকিৎসার দিকটি সুষ্ঠুভাবে দেখা হয়নি বলেও নালিশ করছেন রোগীদের আত্মীয়রা। তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করতে চাননি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও তথ্য আসেনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে পুজোর সময় প্রচুর রেফার হওয়া রোগীদের হাসপাতালে আনা হয়। সে সব না জেনে কিছু বলতে পারছি না।’’ সুপারের কথায়, স্বাভাবিক সময়ে রোজ ১০ থেকে ১২ জন মারা যান। অথচ পুজোর সময়ে রোজ গড়ে প্রায় ১৭ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, অন্যান্য বারের মতো এ বারে চিকিৎসকদের ছুটির ব্যাপার ছিল না করোনা পরিস্থিতির জন্য। তাই হাসপাতালে চিকিৎসকরা ছিলেন। বরং রোগী কম ছিল। তার পরেও পুজোর সময় রোগী মৃত্যু হঠাৎ করে বেড়ে গেল কী ভাবে? তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সদুত্তর মেলেনি। হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু পঞ্চমীর দিনই মারা গিয়েছেন ২৫ জন। ষষ্ঠীর দিন ১৮ জন, সপ্তমীর দিন ২১ জন, অষ্টমীতে ১৪, নবমীতে ১৩ জন এবং দশমীতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পুজোর দিনগুলিতে রোগী দেখতে চিকিৎসকদের আসা নিয়ে অনিয়ম দেখে ক্ষোভ রয়েছে রোগীদের পরিবারের। হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় গোবিন্দ দাস জানান, দিন দশেক তার রোগী ভর্তি রয়েছে। পুজোর আগে চিকিৎসকরা ঠিক মতোই দেখছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুজোর কয়েক দিন চিকিৎসকের দেখা কম মিলেছে। বলা হয়, মঙ্গলবার চিকিৎসক আসবেন।’’ অন্য রোগীর আত্মীয় সুভাষ রায় বলেন, ‘‘চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত কারও দেখা মেলেনি।’’