প্রতীকী ছবি।
এ বছরের জুন-জুলাই মাসে মালদহে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছিল ২১ শতাংশের কাছাকাছি। তাতে উদ্বেগ বেড়ে গিয়েছিল স্বাস্থ্য কর্তাদের। তার পর কিছুটা কমতে শুরু করলেও অগস্ট, সেপ্টেম্বর বা নভেম্বর মাসে সংক্রমণের গড় হার এসে দাঁড়ায় ৭ থেকে ৮ শতাংশে। কিন্তু ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সংক্রমণের হার জেলায় অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। এখন প্রতিদিন সেই হার নেমে ২ থেকে ৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সংক্রমণের হার কমলেও এ নিয়ে এখনই আশাবাদী নন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, সংক্রমণের হার কমলেও টিকা না আসা পর্যন্ত সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কেউ যদি মাস্ক না পরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখে, তবে কিন্তু ফের বেড়ে যেতে পারে সংক্রমণের চিত্র।
লকডাউনের পর থেকেই মালদহ জেলায় করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্য থেকে ফেরার পর থেকেই সংক্রমণ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। সংক্রমণের সংখ্যা মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল জুন-জুলাই মাসে। সে সময়ে জেলায় প্রায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। লালারস পরীক্ষার সংখ্যা অনুযায়ী সেসময় জেলায় সংক্রমণের হার ছিল ২১ শতাংশেরও বেশি। তারপর থেকে অবশ্য কিছুটা কমতে শুরু করে। অক্টোবরে পুজোর মাসে জেলায় ফের সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন স্বাস্থ্য কর্তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত পুজোর মাসে আর সংক্রমণের হার জেলায় সেভাবে বাড়েনি বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। তবে অগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে সংক্রমণের হার নেমে দাঁড়ায় ৫ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে। এ দিকে, ডিসেম্বরের শুরুতে শীত পড়তে থাকায় চিকিৎসকদের একাংশ আশঙ্কা করেছিলেন যে ফের হয়তো যেলায় করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে। কিন্তু ডিসেম্বরের শুরু থেকেই জেলায় করোনার প্রকোপ ক্রমশ কমছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ দিনে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২৫-এর নিচে রয়েছে। লালারস পরীক্ষার হিসেব অনুযায়ী সংক্রমনের গড় হার ২ থেকে ৩ শতাংশ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার জেলায় ৭৮১ জনের লালারস পরীক্ষা করে ১৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৬৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৩৬২ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১০৭ জনের।
এ দিকে, জেলায় করোনা সংক্রমণের হার কমতে শুরু করলেও এ নিয়ে এখনই আশাবাদী নন জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে জেলায় সংক্রমণের হার অনেক কমেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পড়ে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এ সব মানতেই হবে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ অমিতাভ মণ্ডলও বলেন, ‘‘সংক্রমণের হার কমলেও করোনা স্বাস্থ্যবিধি জেলার বাসিন্দাদের মানতে হবে। অন্তত টিকাকরণ না হওয়া পর্যন্ত। না হলে সংক্রমণের আশঙ্কা কিন্তু থাকছেই।’’