ছবি এএফপি।
গরমের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে ট্রেনযাত্রা। তারপরে লম্বা সময় ধরে যেতে হবে বাসে। শ্রমিক স্পেশ্যালে যারা ফিরছেন তাঁদের বাড়ি ফিরতে অনেকরকম ঝক্কি সামলাতে হচ্ছে। এর সঙ্গে এসে জুড়েছে সামান্য কিছু সময়ের ব্যবধানে দু’বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা বা স্ক্রিনিংয়ের ঝক্কি। তার জন্যও লাইনে দাঁড়িয়ে করতে হচ্ছে অপেক্ষা।
ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য স্টেশনে একবার স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করছে রেল কর্তৃপক্ষ। আবার স্টেশন থেকে বেরোলে একই রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও। পরপর একই কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হওয়ায় অধৈর্য্য হয়ে পড়ছেন ক্লান্ত ও উদ্বিগ্ন যাত্রীরা। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, ফেরত আসা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা জরুরি ঠিকই। কিন্তু, রাজ্য ও রেল কেন সমন্বয়ের মাধ্যমে একবারে এই কাজ সেরে নিচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, ‘‘ট্রেনের ভাড়া, খাবার বিলি, যাত্রীদের তথ্য আদান-প্রদান সব পরিকল্পনাহীন। স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থাও তাই। সব পরিকল্পনাহীন। সবক্ষেত্রেই কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয়ের অভাবের বলি হচ্ছেন যাত্রীরা।’’
বৃহস্পতিবার রাতে এনজেপি এসে পৌঁছেছে বেঙ্গালুরু থেকে আসা শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। সেটির যাত্রীদেরও একই দুর্ভোগ হয়। সে দিন রাতে এনজেপিতে স্বাস্থ্যপরীক্ষার নজরদারিতে গিয়েছিলেন করোনা মোকাবিলায় নিযুক্ত উত্তরবঙ্গের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। রেল অধিকারিকদেরও জানিয়েছি। আমরা প্রয়োজনে রেলকে তথ্য দিতে রাজি। আবারও রেলকর্তাদের বলব।’’
দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, স্টেশনে রেলের পরীক্ষায় কারও উপসর্গ দেখা দিলে যাত্রীকে স্বাস্থ্যদফতরের হাতে দেওয়া হয়। তাই সামান্য কিছু সময়ের ব্যবধানে একটা বাড়তি স্ক্রিনিংয়ে কী লাভ, সেই প্রশ্ন উঠছে। তাঁদের একাংশের দাবি, রেলের স্বাস্থ্যকর্মীরা জেলাওয়ারি শিবিরে যোগ দিলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর তাদের কিছু স্বাস্থ্যকর্মীকে সেখা অন্য কাজে লাগাতে পারে।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিক স্পেশালের তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে দিচ্ছি। কোন জেলার কত শ্রমিক রয়েছে, সেই তথ্যও দিচ্ছি। স্বাস্থ্য দফতর চাইলে স্টেশনে স্ক্রিনিংয়ের তথ্য চাইতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রোটোকল অনুসারেই প্রতিটি স্টেশনে ফেরা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা রেলের তরফে করা হবে।’’