প্রতীকী ছবি
সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় আপাতত জলপাইগুড়ির সরকারি হাসপাতালগুলিতে ছোট-বড় সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হল। অত্যন্ত জরুরি কোনও ঘটনা না ঘটলে বা প্রয়োজন না পড়লে অস্ত্রোপচার হবে না বলেই নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে এমনিতেই হাসপাতালগুলিতে রোগীর ভিড় কম। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, শরীরে বড় কোনও সমস্যা না হলে অনেকেই হাসপাতালে আসতে চাইছেন না। তার পরেও যে পরিমাণ রোগী হাসপাতালে আসছেন বা আছেন, তাতেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোগীর খুব কাছে গিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। সে সব দিক মাথায় রেখে আপাতত অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সরানো হচ্ছে ফিভার ক্লিনিকের জায়গাও, জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।
যে কোনও অপারেশন কক্ষকেই (ওটি) সংক্রমণ ছড়ানোর আঁতুড়ঘর বলে মনে করা হয়। তাই সাধারণ সময়েও বারবার ওটি-তে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিশোধন করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে আরওই ঝুঁকি চাইছে না স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের জানানো হয়েছে, বুধবার দুপুর পর্যন্ত জলপাইগুড়ির সারি (সারভেলেন্স ফর সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) হাসপাতালে ৬ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এ দিন এসেছে। কারও শরীরেরই সংক্রমণ নেই বলে জানা গিয়েছে। বাকি তিন জনের নমুনা আজ বৃহস্পতিবার নেওয়া হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “সাধারণ হাসপাতালগুলি থেকে যাতে কোনওভাবেই সংক্রমণ না ছড়ায়, তার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সাধারণ অস্ত্রোপচারগুলি বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি ওটি খোলাই থাকবে।”
এক চিকিৎসকের কথায়, “কেউ যদি দুর্ঘটনার শিকার হন, তার পরে চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়, সেগুলি সবই হবে। শরীরে হঠাৎ বড় কোনও সমস্যা হলে যদি অস্ত্রোপচার করার দরকার হয়, তা হলে সেগুলি ঠিকই হবে। কিন্তু রুটিন অস্ত্রোপচারগুলি হবে না।”
পাশাপাশি অবশ্য এ কথাও জানানো হয়েছে, যদি ছোট সমস্যাতেও দেখা যায় প্রাণ সংশয় বা জটিল পরিস্থিতি, তা হলে সেই অস্ত্রোপচার হবে।
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে একসময়ে করোনা সংক্রমিতদের রাখা হয়েছিল। জলপাইগুড়ি জেলাও কেন্দ্রের নথিতে ক্লাস্টার। সে কারণেই এই পদক্ষেপগুলি জরুরি হয়ে পড়েছিল বলে দাবি। অস্ত্রোপচার বন্ধ হওয়ায় অনেকেই দুর্ভোগের মুখে পড়বেন বলে কর্তৃপক্ষ মানছেন, তবে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে করোনা সংক্রমিত হলে তার ফল আরও খারাপ হবে বলে দাবি।
এতদিন হাসপাতালের বর্হিবিভাগেই ফিভার ক্লিনিক চলছিল। এখন জ্বরের রোগীদের আর বর্হিবিভাগে দেখা হবে না, সাধারণ রোগীর ভিড় যেখানে হয় তার থেকে দূরে এই ক্লিনিক হবে।