অসচেতন: নার্সিংহোমের সামনেই আড্ডা রোগীর আত্মীয়দের। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
শনিবারই মালদহ জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁয়েছিল। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলায় ফের ২৩ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ মিলল। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এক জন বাদে সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। কারও বাহ্যিক উপসর্গ প্রকাশ পায়নি। উপসর্গ নেই, অথচ জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলায় উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। আরও বেশি করে লালারস পরীক্ষার দাবিও উঠেছে। যদিও সূত্রে খবর, মালদহ মেডিক্যালের ভাইরোলজি ল্যাবে লালারসের নমুনা জমে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। তার জেরে লালারসের নমুনা সংগ্রহ কম হচ্ছে বলে অভিযোগ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার যে ২৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কালিয়াচক ২ ব্লকেই ৯ জন রয়েছেন। মোথাবাড়ির প্রতাপপুর গ্রামের এক আক্রান্তের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪১ বছরের ওই ব্যক্তি মুম্বইয়ে কাজ করতেন। জেলার কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে ট্রাকে ১০ দিন আগে জেলায় ফেরেন। মালদহের গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। গ্রামে ফিরে তিনি প্রতাপপুর প্রাথমিক স্কুলের সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। সোমবার তাঁকে কালিয়াচকের সুজাপুর পলিটেকনিক কলেজে চালু করা কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পুরাতন মালদহের আক্রান্তের বাড়ি মহিষবাথানি পঞ্চায়েতের বালুটোলা এলাকায়। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ বছরের ওই যুবক গুজরাতে বৈদ্যুতিক টাওয়ার তৈরির কাজ করতেন।১২ দিন আগে জেলায় ফেরেন। গ্রামের কয়েক জনের সঙ্গে বাড়ির পাশেই একটি ফাঁকা মাঠে তাঁবু টাঙিয়ে থাকছিলেন। এ দিন তাঁকে নারায়ণপুর বাইপাসে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের সরকারি কোয়রান্টিন রাখা হয়েছে। ইংরেজবাজার ব্লকের যে দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন ৮ বছরের শিশুকন্যা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুকন্যা ক্যান্সারে আক্রান্ত। লকডাউনের আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল। সেখান থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে কয়েক দিন আগে তারা জেলায় ফেরে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চার বছরের ওই মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা চলছে।’’ মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘‘আক্রান্তদের বাড়ি সিল করার পাশাপাশি গ্রামে ঢোকার রাস্তায় ব্যারিকেড করা হচ্ছে।’’