প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্তে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করতে জলপাইগুড়ি জেলা সময় নিল মাত্র পাঁচ দিন। ১০ জুন অর্থাত গত সপ্তাহের বুধবার থেকে গত রবিবার পর্যন্ত জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১৮ জন। অন্তত সরকারি রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। জেলায় প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার দিন থেকে ৬৭ দিন সময় লেগেছিল মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১০০ তে পৌঁছতে। তারপরের গতি অবিশ্বাস্য বলে দাবি করছেন প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই। সোমবার রাত পর্যন্ত জেলায় কোনও রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জলপাইগুড়ি কোচবিহারকে ছুঁয়ে ফেলার উপক্রম করেছে। এ দিকে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমেছে। উপসর্গহীনদের পরীক্ষা করা হবে না বলে নির্দেশিকা আসার পরে জেলায় পরীক্ষা কমতে শুরু করেছে। গত রবিবার জেলায় মাত্র ৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ।
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ আধিকারিক (ওএসডি) সুশান্ত রায় অবশ্য বলছেন, “রোগীর সংখ্যা যে বাড়বে তা অনুমান করা হয়েছিল। আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে। কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়াচ্ছি, অন্য পরিকাঠামোও বৃদ্ধি হচ্ছে।” ওএসডির কথায়, “সচেতনতা আসল। সকলকে অনুরোধ করছি, মাস্ক পরুন।”
প্রশ্ন উঠেছে আক্রাম্তের সংখ্যা বাড়ছে কেন? আশেপাশের জেলাগুলির মধ্যে কোচবিহারেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মালদহ ছাড়া উত্তরবঙ্গে কোচবিহারেই ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি। সরকারি-বেসরকারি পরিসংখ্যান মিলিয়ে কোচবিহারে লাখে লাখে পরিযায়ী ঘরে ফিরেছেন। কোচবিহারের আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছিল পরিযায়ীরা ঘরে ফেরার পরে। তবে জলপাইগুড়িতে গত সপ্তাহ থেকে আক্রান্তের হার হু হু করে বাড়তে থাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের তত্ত্বও ফের উঠে এসেছে। যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের একটা বড় অংশ উপসর্গহীন বলে সূত্রের খবর। তাঁদের বিদেশ বা অন্য রাজ্যে যাতায়াতের কোনও তথ্যও পায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে দাবি। স্বাস্থ্যকর্মী, করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা কর্মী বা করোনা আক্রান্তের সরাসরি সংস্পর্শেও এরা আসেননি বলে খবর। তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল কী করে? উত্তর খুঁজছে জেলা প্রশাসন।