প্রতীকী ছবি।
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে করোনা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন পুলিশকে। ফ্রন্টলাইনার হিসাবে মানুষের কাজের সঙ্গেই নিজেদের খেয়াল রাখার কথা বলেন। রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দিয়ে আলাদা করে পুলিশ কর্মীদের জন্য বার্তা দেওয়ান। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের পরেই দেখা যাচ্ছে, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িকে ঘিরে একাধিক উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসার করোনা পজ়িটিভ। এদের মধ্যে একজনকে কোভিড হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের দার্জিলিং রেঞ্জের ডিআইজি অমিত জাভালগি, রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের উত্তরবঙ্গের ডিআইজি ওজি পাল, জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়, শিলিগুড়ির গোয়েন্দা শাখার এসিপি রাজেন ছেত্রী করোনায় আক্রান্ত। এর আগে আরেক এসিপি স্বপন সরকার আক্রান্ত হয়েছিলেন। আরও দুই আইপিএস অফিসার, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থব এবং রাজ্য সশস্ত্র বাহিনী উত্তরবঙ্গের আইজি চেলিং সিমিক লেপচাও করোনায় আক্রান্ত হন৷ তাঁরা অবশ্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন। একাধিক ওসি, আইসিরাও সংক্রমিত হয়েছেন। এই পরিস্থিতি উদ্বেগ ছড়াচ্ছে পুলিশ পরিবারগুলিতে। সরকার ক্ষতিপূরণ, বিমার ঘোষণা করলেও সরকারি প্রক্রিয়া, পদ্ধতি নিয়ে অনেকে পুলিশ কর্মীর প্রশ্ন, বক্তব্য রয়েছে।
রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা জানান, মার্চ মাসের পর থেকে পুলিশের মধ্যে ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে। করোনার সংক্রমণ নিয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এখন তা আরও ছড়িয়েছে। মাঝে পুলিশকর্মীদের মেডিক্যাল কলেজ এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন টাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে আবার কমিশনারেটের তরফে নিয়মিত গার্গেল এবং সরষের তেলের ব্যবহারের পরামর্শ দেন পুলিশ কমিশনার।
শিলিগুড়ির পুলিশ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, করোনার শুরুর দিকে লকডাউন চালু হতেই রাস্তাঘাটে কড়াকড়ি শুরু হয়। শিলিগুড়িতে করোনা ঠেকাকে সার্বিক লকডাউনও হয়েছে। এসবের সময় রাজ্য সশস্ত্র বাহিনী থেকে জওয়ানদের এনে থানা, ফাঁড়ি পিছু কাজ করানো হয়। বাজারহাট, অলিগলি, হাসপাতাল, কোভিড হাসপাতাল থেকে মৃত করোনা রোগী পোড়ানো— সব ক্ষেত্রেই পুলিশকে কাজ করতে হচ্ছে। শেষে ব্যাটালিয়নেই করোনার সংক্রমণ ১০০-এর কাছাকাছি চলে আসে। আস্তে আস্তে তা সামাল দেওয়া হয়।
শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ডগ স্কোয়াড থেকে রিজার্ভ ফোর্স, প্রায় সর্বত্র সংক্রমণ ছড়ানোর খবর রয়েছে। কমিশনারেটের সদর দফতরের অফিসারেরা বলেছেন, ‘‘পুলিশের অন্য দফতরের মতো বাড়িতে বসে কাজ বা দফতর বন্ধ রাখার উপায় নেই। তাই করোনা প্রতিরোধ করতে মাস্ক, সানিটাইজ়ারের ব্যবহার, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, শারীরিক দূরত্ব রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে নিয়মিত বলা হচ্ছে।’’