প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার এবং রোগের তীব্রতা দুই বাড়ছে। তা নিয়ে পুজোর মুখে ঘুম উড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুজোর আগে এই সময় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি রোগীর ‘ভাইরাল লোড’ তথা সংক্রমণের তীব্রতা বেড়েছে। অর্থাৎ ওই রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের ২১ শতাংশের মতো ভাইরাল লোড ছিল। ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসেবে সেই হার বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬.৫ শতাংশে। ১ অক্টোবর পর্যন্ত বেশি ভাইরাল লোড যুক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০.৬৮ শতাংশে।
উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘৫০ শতাংশের বেশি করোনা রোগীর ভাইরাল লোড বেশি। অর্থাৎ এদের হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যেই সংখ্যাটা আগে ছিল ২১ শতাংশের মতো। তাই বিপদ বাড়ছে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। সেই সঙ্গে সংক্রমণের হারও বেড়েছে।’’ করোনা আক্রান্তদের মধ্যে রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি যথেষ্ট চিন্তার। কারণ, যে রোগীকে হোম আইসোলেশনে বা সেফ হোমে রেখে চিকিৎসা করা যাচ্ছিল, ভাইরাল লোড বাড়লে তাঁদের অর্ধেককে হাসপাতালে নেওয়ার দরকার হতে পারে। কিন্তু সেই সংখ্যক শয্যা হাসপাতালগুলিতে নেই।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২৯ অগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংক্রমণের হার ছিল আলিপুরদুয়ারে ১১.৪ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১১ জনের মতো আক্রান্ত মিলছিল। কোচবিহারে ছিল ৫.৮ শতাংশ, দার্জিলিঙে ৪.৪ শতাংশ, কালিম্পঙে ২.২ শতাংশ, জলপাইগুড়িতে ৫.৯ শতাংশ। উত্তর দিনাজপুরে ৩.৯ শতাংশ, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে ৩ শতাংশের মতো। ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সার্বিকভাবে সংক্রমণের হার বেড়েছে। এই ক্ষেত্রে দার্জিলিং জেলায় সব চেয়ে বেশি সংক্রমণের হার, ১৪.৭৯ শতাংশ। তার পরেই মালদহে ১২.২৯ শতাংশ।
ফলে রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। তার মধ্যে পুজোর বাজার করতে রোজই যে ভাবে ভিড় বাড়ছে এবং মাস্ক ছাড়া, দূরত্ববিধি উড়িয়ে মানুষ ঘোরাফেরা করছে, তা আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। কেনাকাটার ভিড় দেখে তাঁদের মধ্য সংক্রমণ কতটা, তা বুঝতে দুই একটি জেলায় বাজারে নমুনা পরীক্ষাও করতে শুরু করছে স্বাস্থ্য দফতর।