ফাইল চিত্র
পুজোর সময়টা বিধি উড়িয়ে ভিড় হলে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তেমনটা হলে তা সামাল দিতে শিলিগুড়ির কোভিড পরিষেবা কতটা প্রস্তুত প্রশ্ন উঠছে সেটা নিয়েও। উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে জটিল পরিস্থিতির করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়িতে রেফার করা হচ্ছে। কিন্তু শিলিগুড়িতেও পরিকাঠামো সীমিত। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ভেবে এখনও খুব বেশি শয্যা বাড়ানো হয়নি। ফলে হঠাৎ অবস্থা জটিল হলে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ তাকিয়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের দিকেই।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কোভিড হাসপাতাল নয়। তবে পরিস্থিতি আঁচ করতে পারছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে কারণে তারাও একটা পরিকল্পনা করে রেখেছেন। হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং একটি রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে বর্তমানে ৮০টির মতো শয্যা রয়েছে। এগুলো সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। ভর্তি রোগীদের কারও সংক্রমণ মিললে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তবে তিন নম্বর আইসোলেশন প্রসূতি এবং অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হওয়া মহিলা রোগীদের জন্য। প্রসূতিদের কেউ করোনা আক্রান্ত হলেও তাঁকে কোভিড হাসপাতালে না পাঠিয়ে এখানে রেখেই চিকিৎসা চলছে। এই মুহূর্তে সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৫টি ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ২৫ ভেন্টিলেটর মজুত করা হয়েছে। পুজোর পর আচমকা সংক্রমণ বেড়ে গেলে যদি কোভিড হাসপাতালে জায়গার অভাব হয় তখন করোনা আক্রান্তকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। সেই সময় এগুলি কাজে আসবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘আমরা একটা পরিকল্পনা ভেবে রেখেছি। কোভিড হাসপাতালে শয্যার অভাবে যদি এখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে হয় তা হলে আলাদা ওয়ার্ডের একটা ব্যবস্থা করতে হবে। অতিরিক্ত ভেন্টিলেটর যেগুলো রাখা হয়েছে তা কাজে লাগবে। কোথায় সেই ওয়ার্ড করা যেতে পারে সে সব ভাবনা চিন্তা চলছে।’’
ইতিমধ্যে মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালে ৩৪টি শয্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তার মধ্যে ৫টি আইসিইউ শয্যা। এখন সেখানে রোগী রয়েছেন অন্তত ৬০ জন। এখানেকাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে ১০টি শয্যা বাড়ানোর কথা হয়েছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করে বাড়তে থাকলে এই শয্যাতেও কুলোবে না বলেই চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন। কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালের পরিষেবা বর্তমানে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ চালাচ্ছেন। সেখানে চিকিৎসক রয়েছেন হাতে গোনা ৩ জন। সরকারে তরফে সেখানে ১০০টি শয্যা রাখা হয়েছে। তার মধ্যে আইসিইউ শয্যা ২৮টি। নার্সিংহোমের নিজস্ব শয্যা রয়েছে ৬০টি।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানান, কোভিড হাসপাতালে কতটা শয্যা বৃদ্ধি করা যায় তা দেখা হচ্ছে। অন্য নার্সিংহোমে কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় কি না সেটাও দেখা হচ্ছে।