অসহায়: এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছে পরিবারগুলি। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি হলেই তাঁবুর ভিতরে ঢুকে পড়ছে জল। আর জোরে হাওয়া দিলে তো কথাই নেই, উড়ে যায় তাঁবু। তখন আশ্রয় নিতে হয় গাছের তলায়। তার পরে ফেরে তাঁবু বেঁধে চলে বেঁচে থাকার লড়াই। লকডাউনে গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে রায়গঞ্জের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোদুয়ারি এলাকায় আটকে পড়েছে বিহারের বাসিন্দা ১২টি বানজারা পরিবার। সেখানেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে খোলা মাঠে ১০টি তাঁবু খাটিয়ে কোনওক্রমে থাকছেন তাঁরা। রোজগার বন্ধ থাকায় খাবারেও পড়েছে টান। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্য দিকে খাবারের অভাবে ওই ১২টি পরিবারের ৪৫ জন বাসিন্দার দুর্ভোগ চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, ওই ১২টি পরিবারের বাড়ি বিহারের বারসই থানার সুধানি এলাকায়। বংশ পরম্পরায় তাঁরা সারা বছর পরিবারের লোকেদের নিয়ে দুই দিনাজপুর ও মালদহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ভেষজ ওষুধ বিক্রি করেন।
ওই দলের রণজিৎ বানজারা, রমেশ বানজারা, রবি বানজারা, কিরণ বানজারা, ইমলি দেবীরা জানালেন, দেড়মাস আগে সুধানি থেকে তাঁরা ১২টি পরিবার এক সপ্তাহের জন্য রায়গঞ্জে ওষুধ বিক্রি করতে আসেন। সেই থেকে তাঁরা বারোদুয়ারি এলাকায় ওই মাঠে তাঁবু খাটিয়ে থাকছেন। তার এক সপ্তাহের মধ্যে আচমকা শুরু হয় লকডাউন। সেই থেকে সেখানেই আটকে তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বৃষ্টি-হাওয়ায় বার বার ভেঙে যাচ্ছে তাঁবু। এ দিকে, লকডাউনে ওষুধ বিক্রি বন্ধ। রোজগার না থাকায় গত একমাস ধরে খাবারের অভাব। তাঁদের বক্তব্য, খোলা আকাশের নীচে খড়ি ও খরকুটো জ্বালিয়ে কোনও মতে আলুসেদ্ধ-ভাত রান্না হচ্ছে। কিন্তু, পর্যাপ্ত চাল ও আলুর অভাবে কেউই পেটভরে খেতে পাচ্ছেন না। জানালেন, দু’সপ্তাহ আগে কয়েকজন ব্যক্তি ১০ কেজি চাল ও ৫ কেজি ডাল দেন। তার পরে আর কোনও সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের।
রায়গঞ্জের বিডিও রাজু লামার অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, প্রশাসনের তরফে এই বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।