—ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এখনও বহু পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি। কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেই রিপোর্ট আসার আগেই বিভিন্ন কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে আবাসিকদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যার জেরে আলিপুরদুয়ারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
যদিও স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে যাঁরা আসছেন তাঁদের ক্ষেত্রে রিপোর্ট না মিললে চোদ্দোদিন কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখার পরেই ছাড়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাঁদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
চতুর্থ দফার লকডাউন শুরু হতেই ভিন্ রাজ্য ও ভিন্ জেলা থেকে বহু মানুষ আলিপুরদুয়ারে ফিরতে শুরু করেন। যাঁদের একটা বড় অংশই পরিযায়ী শ্রমিক। ভিন্ রাজ্য থেকে বাসিন্দারা জেলায় ফিরতেই আলিপুরদুয়ারে কোয়রান্টিন সেন্টারও বাড়ানো শুরু হয়। সেইসঙ্গে করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহেও গতি আনা হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নমুনার পাহাড় জমতে শুরু করায় বহু রিপোর্ট সময়ে আসছে না বলেই অভিযোগ।
চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, কোয়রান্টিন সেন্টারে করোনা পজ়িটিভ কোনও রোগী থাকলে তাঁর থেকে অন্যদের মধ্যেও করোনা ছড়াতে পারে। আবার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে রিপোর্ট আসার আগে যাঁদের ছাড়া হয়েছে তাঁদেরও কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। ফলে তাঁদের থেকেও অন্যেরা আক্রান্ত হতে পারেন।
আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যাঁরা বাইরে থেকে আসছেন তাঁদের কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এবং যাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে তাঁদেরকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে যেহেতু রিপোর্টের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে সে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আসা আবাসিকদের চোদ্দো দিন পরে ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আসা আবাসিকদের সাত দিন পরে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছাড়া হচ্ছে। আর চিকিৎসকদের একাংশের মনে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে তা নিয়েই। তাঁরা জানান, গত ১৩ মে বক্সিরহাট, ময়নাগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর থেকে আসা তিনজনকে কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছিল। ১৬ মে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে ১৯ মে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পরে ২৭ মে তাঁদের পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। অথচ, মাঝের সময়টাতে তাঁরা অনেকের সঙ্গেই মেলামেশা করেন বলে অভিযোগ।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রিপোর্ট কবে আসবে তার অপেক্ষা করে কাউকে তো অনন্তকাল কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা যায় না। তবে রিপোর্ট না এলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আসা বাসিন্দাদের আমরা চোদ্দো দিন কোয়রান্টিনেই রাখছি।’’