ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্রের তরফে ভুল কিট পাঠানোর পর সেগুলি তুলে নেওয়া হয়েছিল। তার পরে এখন পর্যন্ত আর র্যাপিড কিট আসেনি। এই পরিস্থিতিতে কনটেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে অন্য দিক থেকে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে রাজ্য প্রশাসনের একাংশের দাবি। তাদের বক্তব্য, কনটেনমেন্ট বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত করা হলেও প্রতিরোধের কাজ যথাযথ ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, র্যাপিড টেস্টের কিট না আসায় একসঙ্গে অনেকের পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কয়েক হাজারের মধ্যে কোথাও ১৪ তো কোথা চার জনের মাত্র নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর ফলে রোগ চিহ্নিত করা ও প্রতিরোধের কাজে ঘাটতি হচ্ছে বলেও ওই সূত্রের দাবি। শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় ৩টি কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেই যতটা সম্ভব পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে তাঁরা কিছু বলবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশী অবশ্য কোনও উত্তর দেননি। উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা রাজ্যের বিশেষ আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘কনটেনমেন্ট জ়োনে বাড়িগুলিতে সমীক্ষা করা হচ্ছে। কোটা ফেরত পড়ুয়াদের নমুনা পরীক্ষা আগামী দু’দিন করা হবে। তার পর বৃহস্পতিবার থেকে কনটেনমেন্ট জ়োনে বেশি করে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’
জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড এবং লাগোয়া এলাকা এখন কনটেনমেন্ট জ়োন। করোনা আক্রান্ত হয়ে কালিম্পঙের বাসিন্দা যে মহিলা মারা গিয়েছেন, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে জ্যোতিনগরে তাঁদের বাড়ি রয়েছে। সেখানে তাঁর পরিবারের চার জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন তাঁরা সুস্থ। শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক রেলকর্মীর মৃত্যু করোনায় আক্রান্ত হয়ে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি। ওই এলাকাকেও কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল লাগোয়া একটি আবাসনে এক নার্স এবং তাঁর পরিবারের আরও তিন জন করোনায় আক্রান্ত হন। ওই আবাসনকে কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস্তবে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডকে ঘিরে যে কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে, সেখানে মাত্র ১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের কনটেনমেন্ট জ়োনেও ৪ জনের মাত্র নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। আবাসনের কনটেনমেন্ট জ়োনে কারও নমুনা পরীক্ষা হয়নি বলেই সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করেছেন। অথচ কনটেনমেন্ট জ়োনে বাড়িগুলিতে সমীক্ষা চালিয়ে যত বেশি সংখ্যক বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষা করার কথা। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলও অভিযোগ তুলেছিল, কনটেনমেন্ট জ়োনগুলিতে পরীক্ষা সে ভাবে হচ্ছে না। একই অভিযোগ শিলিগুড়ির মেয়রেরও। তা নিয়ে মুখ্যসচিবকে তিনি চিঠিও দিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রের তরফে র্যাপিড কিট না-মেলাতেই সমস্যা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভাইরোলজির ল্যাবরেটরিতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। কিছু দিন আগে মালদহে আরেকটি ল্যাবরেটরি চালু হয়েছে। এখন উপসর্গ দেখে যাদের দরকার কেবল তাদেরই নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)