প্রতীকী ছবি
ভিন রাজ্য থেকে শিলিগুড়ির আদর্শপল্লিতে ফেরা এক শ্রমিকের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়লে তা নিয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়ে যায়। কেন না, হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশিকা না মেনে তিনি যথেচ্ছ ঘোরাফেরা করেছেন এলাকায়। কে বা কারা তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন, তা খুঁজতে হন্যে হয়ে যাচ্ছে প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতর।
ইসলামপুরের কালনাগিন, গুঞ্জরিয়া এলাকার কিছু শ্রমিক মহারাষ্ট্র থেকে ১৩ মে ফিরে সোজা বাড়ি চলে যান। পরে তাঁদের কোয়রান্টিনে দিন চারেক রেখে লালারস সংগ্রহ করে ১৭ মে থেকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়। বাড়ি ফিরে গেলেও সেই নির্দেশ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানা হয়নি বলে অভিযোগ। রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে ৯ জন করোনা পজ়িটিভ। এই নিয়ে রবিবার হইচই পড়ে এলাকায়। এই শ্রমিকদের একাংশ নানা জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে কেবল মালদহ, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর মিলিয়েই অন্তত ৭০ হাজারের মতো পরিয়ায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগেরই সরকারি কোয়রান্টিনে ১৪ দিন রাখা, লালারস পরীক্ষা করা, এ সব কিছুই হয়নি। বাকি জেলাগুলির ক্ষেত্রেও কমবেশি একই ছবি।
মালদহে প্রশাসনের তরফে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা তা করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে পরিযায়ীদের হোম কোয়রান্টিন থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, কোথাও কিছু মানা হচ্ছে না। কয়েক হাজার শ্রমিক হোম কোয়রান্টিনে থাকার নামে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের কেউ করোনা ‘পজ়িটিভ’ হলে তখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়রান্টিনে পাঠানো, লালারস পরীক্ষা করা এবং রিপোর্ট দেখে তবেই বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করার নিয়ম। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না বলে দাবি। তার উপর রিপোর্ট আসতে ৮-১০ দিন সময় লাগায় কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকেও শ্রমিকেরা বার হয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। উত্তর দিনাজপুর, মালদহে এমন কিছু ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি।
উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিক যারা ফিরছেন, তাঁদের কোয়রান্টিনে রেখে লালারস পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেখে তবেই বাড়িতে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। সেই মতো ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলাপ্রশাসনের আধিকারিকদের।’’