ছবি: সংগৃহীত।
আলিপুরদুয়ারে আক্রান্ত চার জনের সংস্পর্শে আসা কিডনি রোগীর দ্বিতীয় দফার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও নেগেটিভ এল। সেইসঙ্গে আক্রান্ত ওই চার জন যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের বেশ কয়েকজন এবং রাজস্থানের কোটা থেকে ফেরা ছাত্রছাত্রী-সহ গত ২৪ ঘণ্টায় তিনশোরও বেশি রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। অন্যদিকে, কোচবিহারে আরও ২০৫ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এল। তার মধ্যে জোড়াইয়ে করোনা আক্রান্ত দু’জনের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। সব মিলিয়ে এ দিনের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন দুই জেলারই স্বাস্থ্য কর্তারা।
কিন্তু যেভাবে ভিন রাজ্য এবং ভিন জেলা থেকে বাসিন্দারা কোচবিহার জেলায় ঢুকতে শুরু করেছেন, তা নিয়ে নতুন করে উদ্বিগ্ন জেলা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। একদিকে, জেলায় এত লোককে কোয়রান্টিনে রাখার কোনও পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই মুহূর্তে একসঙ্গে এতজনের লালারস পরীক্ষা করানোর মতো ব্যবস্থাও নেই উত্তরবঙ্গে। সেক্ষেত্রে আগামিদিনে কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সমস্ত দিকে নজর রেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
কোচবিহার জেলায় অভিযোগ, প্রতিদিন চুপিসাড়ে বহু মানুষ জেলায় ঢুকছেন। এই পরিস্থিতিতে এখনও ৬২৩ জনকে জেলার বিভিন্ন কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন সুত্রেই জানা গিয়েছে, জেলায় বর্তমানে একসঙ্গে ২০০০ বাসিন্দাকে কোয়রান্টিনে রাখার মতো ব্যবস্থা রয়েছে। ৫৫০০ মানুষকে কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে আসরে নেমেছিল প্রশাসন। বিভিন্ন জায়গায় বাধা পেয়ে সেই কাজ শেষ করা যায়নি।
আলিপুরদুয়ার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের সোমবার দিল্লির এমস থেকে চিকিত্সা করিয়ে আলিপুরদুয়ারে ফেরেন ওই কিডনি রোগী। সঙ্গে তাঁর বাবা সমেত চারজন ছিলেন। যাদের প্রত্যেককেই বারবিশার একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়। পরদিন তাদের করোনার পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করা হয়। ওইদিনই কিডনি রোগীকে নিয়ে তাঁর বাবা চিকিৎসার প্রয়োজনে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পৌঁছান। পরে রিপোর্টে দেখা যায়, ওই কিডনি রোগী ছাড়া বাকি চার জনই পজ়িটিভ। ওই দিনই চারজনকে শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিডনি রোগীকে তপসিখাতার করোনা সারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
দ্বিতীয় দফায় তাঁর করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা শিলিগুড়িতে পাঠান আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য কর্তারা। পাশাপাশি ওই চার করোনা আক্রান্ত যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের কয়েকজনের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রাজস্থানের কোটা থেকে ৫৮ জন ছাত্রছাত্রী জেলায় ফেরেন। তাঁদেরও কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠিয়ে লালারস পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়।
আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, ওই কিডনি রোগী, কোটা থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রী-সহ ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট রবিবার রাতে জেলায় পৌঁছয়। আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা জানিয়েছেন, প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ। কোটা থেকে ফিরে আসা ৫৮ জন পড়ুয়াকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)