বিধির বাঁধন কেটে: জলপাইগুড়ির ‘বুর্জ খলিফা’ মণ্ডপে ভিড়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা তীব্র। বৃহস্পতিবার। ছবি: সন্দীপ পাল
কলকাতার ছায়া জলপাইগুড়িতেও। সৌজন্যে ‘বুর্জ খলিফা’ এবং সেই পুজো দেখার জন্য উপচে পড়া ভিড়। তাতেই সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে অনেকটা, বলছে চিকিৎসকেরাই।
দুর্গাপুজোয় কলকাতার শ্রীভূমির পুজোয় বুর্জ খলিফা-র অনুকরণে মণ্ডপ তৈরি হয়। তা দেখতে প্রথম থেকেই উপচে পড়ে ভিড়। তাতে তৈরি হয় একাধিক বিতর্ক। প্রথমে কাছেই দমদম বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় সমস্যা হচ্ছে বলে বন্ধ করে দেওয়া হয় লেজ়ার আলো। তার পরে ভিড়ের জন্য পুজো দর্শনই বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়েছে কিনা সন্দেহ। কারণ, পুজোর পর থেকেই দৈনিক করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তার মধ্যে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সংক্রমণের হার সব থেকে বেশি। একই ভাবে জলপাইগুড়ির শহরতলিতে ১০৪ ফুট উঁচু বুর্জ খলিফা দু’দিন আগে থেকেই ভিড় টানতে শুরু করেছে। সেই ভিড়ে দূরত্ববিধির তো বালাই ছিলই না। মাস্কও বিশেষ দেখা যায়নি। লোক শুধু জলপাইগুড়ি থেকেই আসেননি, শিলিগুড়ি, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি থেকেও অনেকে এসেছেন এই অভিনব মণ্ডপের টানে।
স্বাভাবিক ভাবেই আয়োজকরা খুশি। তাঁরা জানাচ্ছেন, ৫৬টি লেজ়ার আলোর রশ্মি যে জলপাইগুড়ির রাতের আকাশ চিরে যাচ্ছে, তা অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। পুজো উদ্যোক্তা তথা এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রাজেশ মণ্ডল গর্ব করেই বলছেন, “এলাকার প্রতিটি বাসিন্দার সাহায্য নিয়ে ‘বুর্জ খালিফা’ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।’’ কিন্তু এর ফলে যে সংক্রমণের হার লাফিয়ে বাড়ার আশঙ্কা, সে ব্যাপারে তিনি উচ্চবাচ্য করছেন না। উল্টে ভিড় বাড়াতে বলছেন, ‘‘সকলকে ‘বুর্জ খালিফা’ দেখতে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আমরা।”
এই ভিড় সামলাতে প্রশাসনের হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা। রাস্তা আটকেও জনস্রোত ঠেকানো যায়নি। যানজট এলাকা উপচে চলে আসে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সড়কেও। যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বা যাঁদের পরিবারের কাউকে এই অতিমারিতে হারাতে হয়েছে, তেমন অনেকেই অবস্থা থেকে প্রমাদ গুনেছেন। যেমন আশঙ্কার মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা। এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, “ভিড়েই তো সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা বেশি। মানুষ সচেতন হয়ে বিধি না মানলে রোগ বাড়তেই থাকবে।”