মাটিগাড়া কোভিড।
উত্তরবঙ্গের প্রথম কোভিড হাসপাতাল হিসেবে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় হিমাঞ্চল বিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতাল চিহ্নিত হয়েছিল। প্রথমদিকে উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকেই করোনা রোগীদের এখানে আনা হতো। পরে অধিকাংশ জেলায় আলাদা কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়। যত দিন গিয়েছে মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠামোর অভাবগুলো সামনে আসতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাটিগাড়ার হাসপাতালে ক্রিটিকাল কেয়ারের ব্যবস্থা নেই। এখনও আইসিইউ ইনচার্জ নেই। সূত্রের খবর, এই হাসপাতালে ১৪ শয্যার আইসিইউ থাকলেও তা ব্যবহার হয় না। ৮টি ভেন্টিলেটর থাকলেও তা এখনও কাজে আসেনি। তৈরি হয়নি কুইক রেসপন্স টিমও। তাই কোনও রোগীর অবস্থা একটু খারাপ হলেই নিয়ে যেতে হয় কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে। মাটিগাড়ায় চিকিৎসকের সংখ্যাও হাতে গোনা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই বললেই চলে। ২৪ জুন শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বৃদ্ধাকে এখানে ভর্তি করা হয়। বিকেলের পরে বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতেই তাঁকে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবারও এই কোভিড হাসপাতাল থেকে চারজনকে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রত্যেকের নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিতেই তাঁদের রেফার করা হয়েছে। রোগীর পরিবারের একাংশের অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত যে রোগীদের অন্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁদের ঠিকমতো চিকিৎসা এই হাসপাতালে হচ্ছে না।
এই হাসপাতালের কয়েকশো মিটারের মধ্যে আর একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিশেষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অশোকের করোনা ধরা পড়ার পরে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে তাঁর জন্য কেবিন রাখা হয়েছিল। পরে সরকারের নির্দেশে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে। পরিকাঠামো না থাকায় সুগার, হার্টের রুগী এবং মূত্রে সংক্রমণ থাকা অশোককে পাশেরই মাটিগাড়া কোভিডে নিয়ে যাওয়া হয়নি। একই কারণে একটি নার্সিংহোমেই চিকিৎসা চলছে করোনা আক্রান্ত বিদায়ী মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্তের।
করোনা মোকাবিলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উত্তরবঙ্গের স্পেশাল অফিসার চিকিৎসক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘শহরের বাইরে, বহু শয্যা থাকায় ওই হাসপাতালটিকে প্রথমে বাছাই করা হয়েছিল। পরে আমরা মেডিক্যাল লাগোয়া আর একটি কোভিড হাসপাতাল তৈরি করেছি।’’