—প্রতীকী ছবি।
ফের করোনার ধাক্কা। এ বার মারা গেলেন কৃষি দফতরের এক কর্মী। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যালের কোভিড ওয়ার্ডে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের নাম মানস জোয়ারদার। ছাপ্পান্ন বছর বয়সী মানসের বাড়ি, রায়গঞ্জ শহরের অশোকপল্লি এলাকায়। তিনি রায়গঞ্জের উদয়পুর এলাকায় রায়গঞ্জ ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তার দফতরে কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন। ঘটনাচক্রে তিনি সম্প্রতি করোনার প্রথম টিকাটি নিয়েছিলেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’টি টিকা নেওয়ার পরে আরও ২৮ দিন বাদে থেকে তা কাজ শুরু করার কথা।
উত্তর দিনাজপুরের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘কৃষি দফতরের ওই কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। মৃতের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা করোনা সংক্রামিত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে লালারস পরীক্ষা করানোর অনুরোধ করা হয়েছে।’’
মানসের মেয়ে রাজস্থানের কোটায় উচ্চমাধ্যমিক ও ডাক্তারির প্রশিক্ষণ কোর্সে পড়াশোনা করেন। মানসের দাদা তাপসের দাবি, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মানস মেয়েকে নিয়ে কোটার উদ্দেশ্যে রওনা হন। মেয়েকে সেখানে রেখে ৪ মার্চ বাড়ি ফেরেন। তাঁর নির্বাচনের ডিউটি পড়ার কারণে সরকারি নির্দেশে মানস গত ৬ মার্চ করোনার প্রথম ডোজের প্রতিষেধকও নেন। এরপর গত ১৫ মার্চ তিনি দফতরে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। এর পরেই চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি লালারস পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তারপরেই ১৮ মার্চ পরিবারের লোকেরা তাঁকে মেডিক্যালে ভর্তি করেন। গৌতম বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি প্রতিষেধক নেওয়ার আগে থেকেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’’
অন্যদিকে, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েকমাস উত্তর দিনাজপুর জেলায় করোনা সংক্রমণের হার কম থাকলেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫ জন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। একই পরিস্থিতি মালদহ জেলাতেও। সেখানে শনিবার সাত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তুলনায় দক্ষিণ দিনাজপুরে করোনা সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে কমছে। গত প্রায় ওই জেলায় পাঁচ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিন জেলারই স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, করোনা সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা বাড়তে থাকায় লালারস পরীক্ষা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে তিন জেলার বাসিন্দাদের মাস্ক পড়ে বাড়ির বাইরে বার হওয়ার ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে।’’
তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত সেন, অনুপরতন মোহান্ত