ছবি: পিটিআই।
এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক করোনা সংক্রমণ হল মালদহে। সোমবার ৭৫ এবং মঙ্গলবার ৯৪ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্তদের তালিকায় জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর), ভুতনি থানার ওসি, মালদহ ও কালিয়াচক থানার একাধিক পুলিশ আধিকারিক, কনস্টেবল, সিভিককর্মী রয়েছেন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক থেকে শুরু করে এক বছরের একটি শিশুও আক্রান্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৯৯ জন।
মালদহ জেলায় কেন এত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে? প্রথম দিকে ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফেরার পরে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছিল। এখন সংক্রমণের সংখ্যা আরও গতি পেয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান, ৭-১৩ জুলাই সাত দিনে জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৫ জন। যেখানে শুরুতে জেলায় প্রথম এক জন আক্রান্ত হন ২৬ এপ্রিল। তার পর আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪৫ জনে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ৫৩ দিন।
জেলার একাধিক চিকিৎসকের বক্তব্য, প্রচার সত্ত্বেও প্রথম লকডাউনের সময় অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মানেননি। আনলক-পর্ব শুরুর পরে পরিস্থিতি লাগামছাড়া হয়ে যায়। টোটো বা অটোয় গাদাগাদি করে যাতায়াত, মাস্ক না পরা, বাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার মতো একাধিক ভুল এমন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। আরেকটি বিষয়ও উদ্বেগের। তা হল, প্রথম থেকেই জেলায় আক্রান্তদের অনেকের শরীরে বাহ্যিক উপসর্গ থাকছে না। ফলে কে আক্রান্ত আর কে নন, তা বোঝা যাচ্ছে না। উপসর্গহীন রোগীরা সকলের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। লালারস পরীক্ষার পরে জানা যাচ্ছে যে, তিনি পজ়িটিভ। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে তিনি যাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের কেউ কেউ সংক্রমিত হচ্ছেন।
মালদহ থানার এসআই, কনস্টেবল, সিভিককর্মী, গাড়ির চালক মিলিয়ে ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আগেও এই থানার কয়েক জন পুলিশ ও সিভিককর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন। একটি থানার এত সংখ্যক পুলিশ আক্রান্ত হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা সামলানো নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। থানা চত্বর গার্ডরোল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। থানার প্রবেশপথে গার্ডরুমে অভিযোগ জমা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতির মধ্যেও মালদহ থানা-সহ গোটা জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে।