প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণ বিদ্যুৎ গতিতে বাড়ছে। দার্জিলিং জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়াল। এঁদের বেশির ভাগই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। এ দিন দার্জিলিং জেলায় রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুয়ায়ী, একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯৩ জন। তা ছাড়া গত কাল রাতে আরও ১৫৮ জন সংক্রমণের খবর মিলেছিল। সব মিলে ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আক্রান্ত ৮৫১ জন।
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এই বিপুল সংখ্যক রোগীদের নজরদারি করতেও বেগ পেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে। এর পরেও বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ নেই। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জেলায় সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি। কখনও তা ৬০ শতাংশে গিয়েও ঠেকছে। অর্থাৎ জেলার বাসিন্দাদের লালারসের যে সংখ্যক নমুনা প্রতিদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যাচ্ছে তাতে ১০০ জনের মধ্যে ৬০ জনই আক্রান্ত দেখা যাচ্ছে। তাতে পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বেড়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ওই ল্যাবের চিকিৎসক অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘গত বছর যেখানে সর্বাধিক ১২ থেকে ১৪ শতাংশের মতো সংক্রমণের হার ছিল, দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেই হার বেড়ে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হচ্ছে দার্জিলিং জেলায়। যা খুবই চিন্তার।’’
চিকিৎসকদের মতে, বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা আক্রান্ত হলে তার অন্তত ১৫ শতাংশ রোগীর অবস্থাও যদি জটিল হতে থাকে, তাতেও কয়েশো রোগীকে হাসপাতালে বা নার্সিং হোমে বা সেফ হোমে ভর্তি করাতে হবে। আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়বে সেই চাপ ততই বাড়বে। এমনিতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং শহরের নার্সিং হোমগুলিতে কোভিড শয্যা কার্যত নেই। ভর্তি হতে চাইলে লাইনে থাকতে হচ্ছে। রোগী সুস্থ হয়ে বা মারা গেলে কোনও শয্যা ফাঁকা হলে তা ভর্তি হতে এক মূহূর্তও লাগছে না। নিরুপায় হয়ে অনেককে হোম আইসোলেশনেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। সে সব কয়েকটি ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে শেষপর্যন্ত যখন হাসপাতালে জায়গা মিলছে তখন তাঁকে বাঁচানো মুশকিল হচ্ছে। মোটা টাকা খরচ করে নার্সিং হোমে ভর্তি করেও অনেক সময় রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।
অভিযোগ, নার্সিং হোমগুলির একাংশ মাত্রাতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, নার্সিং হোম আগেই বলে দিছে, শয্যা নেই। এর পর একাংশ রোগীর পরিবারের পরিস্থিতি বুঝে মোটা টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা করছে। প্রশাসনের তরফে কোনও রকম নজদরদারি নেই। অথচ গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে মাটিগাড়া এবং কাওয়াখালির দুটো নার্সিংহোম গ্রহণ করে সরকারি ভাবে তিন শতাধিক শয্যার ব্যবস্থা করে চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়েছিল।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা চিকিৎসায় এইচডিইউ শয্যা বাড়াতে সরঞ্জাম দ্রুত আসছে। শয্যা আরও বাড়ানোর কথা হয়েছে।’’