প্রতীকী ছবি
গত সপ্তাহের বুধবারে নার্সিং স্টুডেন্টের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার পর থেকে চার দিন একটি রিপোর্টও হাতে পায়নি জলপাইগুড়ি জেলা। চতুর্থ দিন অর্থাৎ রবিবারের বুলেটিনেও রিপোর্ট প্রাপ্তির ঘরে শূন্য লেখা ছিল। রাতে জেলায় খবর এল, নাগরাকাটায় আক্রান্ত দু’জন। তাঁরা চা বাগানে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক। সোমবার রাতে এই সংখ্যা আরও এক বেড়ে হয়েছে তিন। তিনিও সদ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে ফিরেছিলেন।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, যে সব নমুনা গিয়েছে পরীক্ষার জন্য, সেগুলির রিপোর্ট পেতে আর কত দেরি হবে? কারণ, রিপোর্ট পেতে যত দেরি হবে ততই আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের সংখ্যা বাড়বে। চা বলয়ে রোগের সংক্রমণ ছড়ানোর পরেও এই দেরির ঝুঁকি নেওয়া কতটা ঠিক, সে প্রশ্ন প্রশাসনিক কর্তাদেরও। করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওএসডি) সুশান্ত রায় বলেন, “প্রচুর নমুনা পরীক্ষার জন্য আসছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা দিন-রাত এক করে কাজ করছেন। এই মাসটা রিপোর্ট পেতে একটু দেরি হতে পারে। জলপাইগুড়ি জেলায় কিট পরীক্ষা শুরু করতে পেরেছি। তাতে চাপ খানিকটা হলেও কমবে। জুনের গোড়া থেকে ফের দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাবে।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এখনও ২৭৮৩ জনের রিপোর্ট আসা বাকি। এই বিপুল সংখ্যকের কত জনের শরীরের সংক্রমণ রয়েছে, তা প্রশাসনের অজানা।
চা বলয় নিয়ে উদ্বেগ প্রথম থেকেই ছিল। কেন্দ্র পঞ্চাশ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে বাগানের কাজ শুরু করার জন্য ‘চাপ’ দিলেও রাজ্য অনেক দিন তা মেনে নেয়নি। শেষে বিভিন্ন ‘লবির’ চাপে তা মেনে নেওয়া হয়। চা শ্রমিকদের সংগঠনগুলির দাবি, এখন পঞ্চাশ শতাংশ বলা হলেও বহু বাগানে পুরো শ্রমিকদের দিয়েই কাজ করানো হচ্ছে। তার ফলে শ্রমিকরা কাছাকাছি এসেই কাজ করছেন। এখন দু’জনের সংক্রমণ মেলায় উদ্বেগ বেড়ে গেল। সুশান্তবাবুর কথায়, “চা বাগান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা চা বলয়ে কোয়রান্টিন কেন্দ্র বাড়িয়েছি।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগরাকাটার দু’জনের মতো এ দিনের মহিলাও পরিযায়ী। তিনি ২২ মে বাসে উত্তরপ্রদেশ থেকে ফিরেছেন। ছিলেন ধূপগুড়ির কোয়রান্টিনে ছিলেন। উপসর্গ থাকায় রবিবার তাঁর ট্রুন্যাট পরীক্ষা হয়। সোমবার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাঁকে সারি থেকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮।