প্রতীকী ছবি
অন্য জায়গাগুলির তুলনায় ধীরে হলেও শিলিগুড়িতেও করোনা সংক্রমিতর সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড শক্তিগড়ের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ায় তাঁকে ১৪ মে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় নিয়ে যান এক ছেলে। অন্য এক ছেলের চাকরির সুবাদে কলকাতায় বায়ূসেনার হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দু’দফায় লালারস পরীক্ষা হয় ওই ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির। দ্বিতীয়বার ২০ মে-র পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ১৬ মে কলকাতা থেকে ফেরেন তাঁর ছেলে। বাবার দেহে সংক্রমণের খবর মেলায় তখন ওই ছেলে, গাড়ির চালক এবং পরিবারের আরও ৬ জনের লালা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ দিনই জানা গিয়েছে, খড়িবাড়ির এক মহিলার দেহেও করোনা সংক্রমণ মিলেছে। বয়স ৫৯ বছর। তিনি দিন কয়েক আগে মুম্বই থেকে ফিরেছেন। তাঁস সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের খোঁজ চলছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনিও ক্যান্সার রোগী।
এই নিয়ে শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং শিলিগুড়ি মহকুমা মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯ জন। তার মধ্যে ১১ জন সুস্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শক্তিগড় এলাকায় আক্রান্তের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন, এমন ৭ জনকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের লালারসের পরীক্ষা রিপোর্ট আসার পরেই পদক্ষেপ করা হবে। প্রয়োজনে যে আবাসনে তাঁরা থাকতেন সেখানকার অন্য বাসিন্দাদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হতে পারে। আজ, মঙ্গলবার তাঁদের লালারস নেওয়ার কথা। যে গাড়িতে করে তারা কলকাতায় গিয়েছিলেন ওই চালক মাটিগাড়ার পতিরামজোতে থাকেন। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করছে স্বাস্থ্য দফতর। এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুরসভা। এলাকার কাউন্সিলর দীপা বিশ্বাস জানান, পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজন মতো সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে রবিবার রাতেও স্থানীয় বাসিন্দারা হইচই করেন। তাদের একাংশের অভিযোগ, বাইরে থেকে ফিরে এলেও সরকারি স্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উদ্বেগ বেড়েছে। এদিনও এলাকায় মানুষ তা নিয়ে ভিড় জমান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। নকশালবাড়ির একজনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেল। হাতিঘিষা কোয়রান্টিনে ছিলেন তিনি।
দিন কয়েক আগেই শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক ফল বিক্রেতা এবং তার ছেলের সংক্রমণ ধরা পরে। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তিনিও কলকাতা থেকে ফিরেছিলেন বলে দাবি। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক পরিযায়ী শ্রমিক দিল্লি থেকে বিহার হয়ে ফিরলে তাঁর শরীরেও করোনার সংক্রমণ আছে জানা গিয়েছে। শহরে একের পর এক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন পুর কর্তৃপক্ষও। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে। তাঁরা যে ভাবে জানাবেন, সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।