ছবি সংগৃহীত
করোনা সংক্রমণ রোখার কড়াকড়ি শুরু হয়েছে সিকিম-বাংলা সীমানায়। রংপো বা মেল্লি- দিনভর গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলছে নজরদারি। সিকিমে ঢুকতে চাইলে ‘স্ক্রিনিং’ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাত্রীদের ছোট রাজ্যটিতে ঢুকতে হচ্ছে। সীমানা গেটের পাশেই চলছে স্ক্রিনিং। গত এক সপ্তাহে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সিকিমের একাধিক জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। শুধু ঘোরা নয়, কাজেকর্মে সিকিমে যাওয়া যাত্রীদেরও নজরদারির মধ্যে সিকিমে থাকতে হচ্ছে। দেশের নাগরিকদের নিয়ে কড়াকড়ি থাকলেও বিদেশিদের জন্য দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিকিমে। এখনও সিকিমে করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলেনি।
ইতিমধ্যে সিকিমের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে কোনও কিছু বন্ধ, কড়াকড়ি বা নির্দেশিকাতে দিনক্ষণের আগাম ঘোষণার দাবি তুলছেন। দেশের পর্যটকদের স্ক্রিনিং করে গতিবিধি স্বাভাবিক রাখার কথা বলা হচ্ছে। তেমনিই, লাচেন বা লাচুং-এর মতো এলাকাগুলি হুট করে বন্ধ করে দেওয়ারও বিপক্ষে সিকিমের বিভিন্ন পর্যটন, পরিবহণ এবং ব্যবসায়িক সংগঠনগুলি। যদিও করোনার সংক্রমণ এবং সতর্কতা নিয়ে সরকারের কাজকে সমর্থন জানিয়েছে তারা। শনিবার তাঁরা গ্যাংটকে নিজেরা বৈঠক করেছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে সংগঠনগুলির যৌথ প্রতিনিধি দল সরকারিস্তরে আলোচনার জন্য রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে সময় চেয়েছে।
সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, সরকার যা ব্যবস্থা নিচ্ছে তা ঠিক। কিন্তু সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। যে যার মতো এলাকাভিত্তিক বাসিন্দাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা দিচ্ছে। আগাম ঘোষণা করে নির্দেশ কার্যকরী করা হলে সবারই সুবিধা হবে। হঠাৎ করে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের জন্য দেশের পর্যটকদের মধ্যে সিকিম নিয়ে ভুল বার্তা গিয়েছে বলে তাদের দাবি। এখনই পর্যটন দফতরের উচিত করোনো এবং সিকিম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা। যেভাবে সব নির্দেশিকা জারি, কাজ চলছে তাতে সিকিম সুরক্ষিত-এর বদলে উল্টো ছবি দেশের মানুষের কাছে যাচ্ছে বলেও তাদের দাবি।
সিকিম রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকার পরেই গত সপ্তাহ থেকে সিকিমে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। ঠান্ডা প্রবণ পাহাড়ি এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে তা সামাল দেওয়া অত্যন্ত মুশকিল হয়ে পড়বে। বিশেষ করে, প্রত্যন্ত গ্রামীণ পাহাড়ি এলাকায় কেউ কোনওভাবে আক্রান্ত হলে তার খবর আসতেই ২-৩ দিন লেগে যাবে।’’ তিনি জানান, বিদেশিরা সারা বছর সিকিমের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ান। সংক্রমণের সম্ভাবনা রুখতে বিদেশিদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পরে অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত রাখা হয়েছে।
এপ্রিলের রেডপান্ডা উৎসব স্থগিত রাখা হয়েছে। মার্চের গরমের পর্যটন মরসুম কার্যত বন্ধ। সেনাবাহিনী ছাড়া নাথু-লা সীমান্তে যাতায়াত, বর্হিবাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় পর্যটন নির্ভর সিকিমের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির আশঙ্কা। তাই, আগামী কয়েকমাস লাইসেন্স, বিভিন্ন ফি’তে ছাড়, ঋণের কিস্তিতে সময়, লিজ়ের সময় বৃদ্ধি’র মত দাবি নিয়ে সিকিম সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংগঠনগুলি।