প্রতীকী ছবি
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত তালিকায় হটস্পট নয়, কিন্তু সংক্রমণ রয়েছে, এমন জেলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে জলপাইগুড়ি। তার ফলে কিছু নিষেধাজ্ঞাও জারি হওয়ার কথা জেলা জুড়ে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে জেলা সদরে বাজার এলাকাগুলি দেখে বোঝার উপায় নেই, লকডাউন চলছে। বিভিন্ন পথে দেখা গিয়েছে ভিড়। শোনা গিয়েছে গাড়ির হর্ন।
তবে বিকেলে শিলিগুড়ি লাগোয়া জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত কোনও কোনও জায়গায় বিধিনিষেধে জোরদার করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এর মধ্যে জ্যোতিনগর এলাকা রয়েছে বলে প্রশাসনের সূত্রটি জানিয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা করা হয়নি।
জেলাশাসকও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তিনি জানিয়েছেন, এই নিয়ে রাজ্য প্রশাসন থেকে তাঁর কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। ফলে গোটা জেলায় লকডাউন কতটা আঁটসাটো করা হবে, তা নিয়ে সংশয়েই রয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।
কালিম্পংয়ের করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে শিলিগুড়ি লাগোয়া জ্যোতিনগরের চার জন করোনা আক্রান্ত হন। এই এলাকা জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত।
আক্রান্তদের প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সে সব নজরে রেখেই জলপাইগুড়ি জেলাকে ক্লাস্টার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, বলছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক মহল।
কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যে এলাকাগুলি হটস্পট নয়, অথচ ক্লাস্টার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, সেখানে যাতে নতুন করে সংক্রমণ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে। এই নির্দেশিকার পরেই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি জলপাইগুড়িতে লকডাউন নিয়ে কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হবে? কিন্তু বৃহস্পতিবার কোনও কিছুই স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
বরং জেলা সদরে ভিড় দেখে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করেছেন লকডাউন উঠে গেল কিনা, তা নিয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জেলার চা বাগান থেকে শুরু করে খেতের আলু তোলা, শহর-গ্রামের বাজার আগের মতোই খোলা রয়েছে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “ক্লাস্টার নিয়ে কোনও নির্দেশিকা পাইনি। তবে লকডাউন চলছেই। সামাজিক দূরত্ব মানতে কড়াকড়িও চলছে।”পুলিশের এক কর্তার কথায়, “নবান্নের কথাতেই কড়া নজরদারি চলছে। লকডাউন ভাঙলে গ্রেফতারও করা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নির্দেশিকায় ক্লাস্টার এলাকায় সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (সারি) হাসপাতাল এবং কোভি়ড হাসপাতাল থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় দুটো কোভি়ড হাসপাতাল রয়েছে। নতুন করে আরও পাঁচ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য জলপাইগুড়ি থেকে পাঠানো হয়েছে।
এ নিয়ে জেলা থেকে মোট ৩৪ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে এখনও সংক্রমণ মিলেছে ৪ জনের শরীরে। এঁদের মধ্যে তিন জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে বলে খবর। তাই প্রশাসন সঠিক ভাবেই কাজ করছে বলে দাবি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।