অশোক ভট্টাচার্য-গৌতম দেব
করোনা প্রতিরোধে লড়াই নিয়ে কি শেষ পর্যন্ত বাগযুদ্ধ বেধে গেল মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এবং পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের মধ্যে?
অভিযোগ উঠেছে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এখনও পর্যাপ্ত পিপিই, মাস্ক বা স্যানিটাইজার নেই। এই পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার কিছু সরঞ্জাম মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেন গৌতম দেব। একই দিনে মেয়র শিলিগুড়িতে করোনা চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিলেন।
এই নিয়ে গৌতম কিন্তু কিছু বলতে চাননি। তাঁর অভিযোগ, মেয়র রাজনীতি করছেন। গৌতম দেব বলেন, ‘‘মেয়রের কথা নিয়ে কোনও কিছু বলতে চাই না। এটাই বলব, এখন রাজনীতি করার সময় নয়।’’
জবাবে মেয়র বলেন, ‘‘মন্ত্রীর কথা নিয়ে কিছু বলছি না। মেয়র হিসেবে, একজন বিধায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে সব কিছু জানানো। তিনি আজ বলেছেন, কলকাতায় অনেকে সুস্থ হচ্ছেন। এখানে কিন্তু সেটা হচ্ছে না। বাস্তবে, চিকিৎসা পরিষেবাও ঠিক মতো মিলছে না বলে খবর পেয়েছি। এটা দেখেও যদি আমি গোপন করি, তা হলে নিজের দায়িত্বকে অবহেলা করা হবে। ’’
কী লিখেছেন অশোক ভট্টাচার্য? মেডিক্যালে আরও বেশি করে নমুনা পরীক্ষা, আইসোলেশনে আক্রান্ত এবং সন্দেহভাজনদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা এবং সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ভর্তিদের যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা দেওয়ার দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মেয়র।
তৃণমূলের একটি অংশ মনে করছে, যেহেতু শিলিগুড়ির করোনা সংক্রান্ত সব কিছু এখন গৌতম দেব নিজে দেখছেন, তাই এটা তাঁকেই খোঁচা দেওয়া। দলের তরফে জানানো হয়, এ দিনই মেডিক্যালে গিয়ে অধ্যক্ষ, সুপার, মেডিসিন বিভাগের প্রধান, ডিন, নার্স ও চিকিৎসকদের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন গৌতম। কিছু উৎসাহী ব্যক্তি মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার দিয়েছিলেন। সেগুলি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন তিনি। আরও পিপিই এবং অন্যান্য সরঞ্জাম দু’তিন দিনের মধ্যে দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
মেয়র জানান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের আইসোলেশন, করোনা হাসপাতাল, কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলিতে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। আবার কিছু চিকিৎসক যথাযথ ভাবেই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। দেরিতে হলেও চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ পোশাক, অন্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা কিছু করা হয়েছে। তবে আরও দরকার। সে কথাই তিনি প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।