বন্ধ: বালুরঘাটের একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, করোনাভাইরাসের জেরে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকবে।
মালদহ জেলা প্রকল্প আধিকারিক হরেকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘এ দিন রাতে নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে। তাতে বলা হয়েছে শিশু ও গর্ভবতীদের এক দফায় ২ কেজি করে চাল ও ২ কেজি করে আলু অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসবেন।’’
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তিন জেলার কোনও কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা ছিল। সেই কেন্দ্রে আসা শিশুদের রান্না করা খাবারও দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও মৌখিক নির্দেশ পেয়ে কেন্দ্র খোলাই হয়নি। সেখানে খাবারও পায়নি শিশুরা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখার বিষয়ে বুধবার জেলা প্রশাসন ও আইসিডিএস প্রকল্পের জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন নারী, শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।
গৌড়বঙ্গের তিন জেলার প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকার ব্যাপারে দুপুর পর্যন্ত প্রশাসনিক মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনও নির্দেশনামা পৌঁছয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকেরা আইসিডিএস প্রকল্পের আধিকারিকদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন। সেই মতো সোমবার রাত থেকে ব্লকে ব্লকে শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক ও সুপারভাইজারদের মাধ্যমে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু তিন জেলার অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাছেই দুপুর পর্যন্ত এমন কোনও নির্দেশিকা পৌঁছয়নি। তার জেরে এ দিন তিন জেলার বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা ছিল।
জানা গিয়েছে, এ দিন মালদহের বামনগোলা ও বেশ কিছু ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে হবিবপুর, ইংরেজবাজারের মতো কয়েকটি ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা ছিল। এ দিন দুপুরে জেলা প্রকল্প আধিকারিক বলেছিলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি বন্ধ এবং শিশুদের খাবার কী ভাবে বিলি করা হবে তা নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা পাইনি। জেলাশাসক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখতে বলার পরে তা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছি।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলায় মঙ্গলবার বেশিরভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই খোলা ছিল। পরে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি কেন্দ্রের কর্মীদের হ্যোয়্যাটসঅ্যাপে অঙ্গনওয়াড়ি বন্ধের সরকারি নির্দেশ পাঠানো হয়। জেলা আইসিডিএস প্রকল্প আধিকারিক সুশেন পোদ্দার বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশিকা প্রশাসনের তরফে জেলার প্রতিটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এ দিন কয়েকটি আইসিডিএস কেন্দ্র খোলা ছিল। জেলা প্রোগ্রাম অফিসার দিব্যেন্দু দত্ত জানান, বুধবার থেকে এ জেলার ৩২৪৪টি আইসিডিএস কেন্দ্রের উপভোক্তাদের খাদ্যসামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হবে।