ধুনুরিদের উপার্জন এখন তলানিতে ঠেকেছে। নিজস্ব চিত্র।
শীতের শুরুতেই ঠান্ডায় জবুথুবু কোচবিহারের মানুষ। পারদ নেমেছে ১৩ ডিগ্রিতে। ঠান্ডা পড়তেই শীতবস্ত্রের বিক্রি বেড়েছে কোচবিহারে। এক দিকে যেমন শীতবস্ত্রের বিক্রি বেড়েছে, অন্য দিকে কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন কোচবিহারের ধুনকর বা ধুনুরিরা। প্রতি বছর শীত পড়তেই লেপ তৈরির জন্য ডাক পড়ত তাঁদের। বর্তমানে বাজারে ছেয়ে গিয়েছে আধুনিক কম্বলে। লেপের তুলনায় কম্বলের চাহিদা বাড়ায় ধুনুরিদের আর ডাক পড়ে না। আগে প্রতি বছর শীতের মরসুমে এক জন ধুনুরি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতেন। সেই উপার্জন এখন তলানিতে ঠেকেছে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর অর্ধেকেরও কম লেপ বানানোর বরাত পেয়েছেন কোচবিহারের ধুনুরিরা। এর কারণ হিসেবে ধুনুরিদের ধারণা, প্রতি বছর বাইরে থেকে বহু ব্যবসায়ী কম্বলের পসরা সাজিয়ে কোচবিহারে দোকান দেন। ফলে তাঁদের তৈরি সাবেক লেপের তুলনায় ক্রেতা আকৃষ্ট হচ্ছেন বাহারি কম্বলের দিকেই।
শীতের সময় ছাড়াও আগে বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে তুলোর লেপের চাহিদা ছিল। কিন্তু বর্তমানে মানুষ লেপের তুলনায় কম্বল বেশি পছন্দ করছেন। যার জেরে ধুনুরিদের ব্যবসায় ভাটা পড়েছে।
আরও পড়ুন: বিস্তর অমিল সুর ও তালে
কোচবিহারের অমরতলার বাসিন্দা পেশায় ধুনুরি মফিদুল মিয়া বলেন, “প্রতি বছর শীতের শুরুতে আমাদের ডাক পড়তো লেপ-তোশক তৈরির জন্য। বর্তমানে তোশক তৈরির কিছুটা চাহিদা থাকলেও লেপের চাহিদা একদম কমে গিয়েছে। গত বছর পর্যন্ত শীতের মরসুমে অনেক কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর এক দিকে করোনা অন্য দিকে কম্বলের দাপট। ফলে বর্তমানে এই উপার্জনে সংসার চালানোর মুশকিল হয়ে পড়েছে।’’
আরও পড়ুন: ক্ষমতার টানে দলবদল?
মফিদুলের মতো আরও অনেক ধুনুরি একই সমস্যার মুখোমুখি। নিরূপায় হয়ে তাঁরা ভাবছেন অন্য পেশায় যাওয়ার কথা।