সায়ন্তন গুহ এবং পঙ্কজ ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।
এ বার তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কমিটির সম্পাদক পদের দায়িত্ব দেওয়া হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর পুত্র সায়ন্তন এবং প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে পঙ্কজকে। যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর ছেলে হীরকজ্যোতিকে। নেতাদের দ্বিতীয় প্রজন্মকে এ বার এ ভাবেই সামনে তুলে আনা হল। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া হল ব্যাটন।’’
কোচবিহার তৃণমূলের কার্যালয়ে বুধবার জেলা কমিটি ঘোষণা হয়। সঙ্গে দলের যুব, মহিলা ও আইএনটিটিইউসির জেলা কমিটিও ঘোষণা হয়েছে। দলের কোচবিহার জেলার সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “দলের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা হয়েছে। স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্যদের নিয়ে ৭৬ জনের জেলা কমিটি হয়েছে। তাতে আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে জেলার সমস্ত ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সভাপতিরা রয়েছেন। সেখানে মন্ত্রী-বিধায়কের পুত্রেরা যাঁরা দলের কাজ করছেন, তাঁরাও রয়েছেন।”
রবীন্দ্রনাথ-পুত্র পঙ্কজ ২০১৮ সালের আগেই রাজনীতিতে যোগ দেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ আসন থেকে প্রায় ৪৮ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন পঙ্কজ। বেঙ্গালুরু থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যান পঙ্কজ। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে সেখানেই কর্মরত ছিলেন। ফিরে রাজনীতিতে যোগ দেন। তাঁর কথায়, “অনেক দিন ধরেই রাজনীতিতে আছি। দল যা দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করব।” রবীন্দ্রনাথ বলেন, “পঙ্কজ গ্রামে গ্রামে ঘুরে রাজনীতি করেছে। দলীয় নেতৃত্ব তাকে যোগ্য মনে করে দায়িত্ব দিয়েছেন।” মন্ত্রী উদয়ন গুহের পুত্র সায়ন্তন বেসরকারি ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি সরাসরি দলের কোনও দায়িত্বে ছিলেন না। কিন্তু দলের হয়ে বা বাবার (উদয়ন গুহ) প্রচারে তাঁকে দেখা গিয়েছে। বললেন, “দলীয় পদ একটা সম্মান। কাজের ফাঁকে দল করব। মানুষের জন্য কাজ করব।” উদয়ন বলেন, “অনেক দিন ধরে ও কাজ করছে।”
চাকরি-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারীর ছেলে হীরকজ্যোতিকে দলের যুব সংগঠনের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ায় অনেকটাই বিপাকে পরেশ। আদালতের রায়ে তাঁর মেয়ের চাকরি গিয়েছে। গিয়েছে মন্ত্রিত্ব। তার পরেও ছেলেকে দল দায়িত্ব দিল কেন, আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। পরেশ বলেন, “বয়স কম। কাজে উদ্যম রয়েছে। দলের হয়ে কাজে এগিয়ে যাবে, এই কামনা করি।” হীরক বলেন, “অনেক দিন ধরেই দলের হয়ে কাজ করছি। আগামী দিনেও কাজ করতে চাই।” পরেশ-অনুগামীদের দাবি, মেখলিগঞ্জ এলাকায় দলীয় সংগঠন ধরে রাখায় হীরকজ্যোতির ভূমিকা রয়েছে। সঙ্গত কারণেই তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন।