বাছাই: হলদিবাড়িতে লঙ্কার আড়তে। ফাইল চিত্র
‘লঙ্কা’ আগেই সেঞ্চুরিতে পৌছে অপরাজিত, এবারে হাফসেঞ্চুরি করে ফেলল ‘পেঁয়াজ’ও!
কোচবিহারের আনাজ বাজারে লঙ্কা-পেঁয়াজের জোড়া ঝাল-ঝাঁঝে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম। কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ থেকে নতুন বাজার, রেলগেট থেকে দেশবন্ধু মার্কেট সব বাজারেই প্রায় এক ছবি। পেঁয়াজের খুচরো দর উঠেছে কেজি প্রতি ৫০ টাকা। লঙ্কা কিছুদিন আগে থেকেই প্রতিকেজিতে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ভরা বর্ষার সময়ে দাম ১৫০ টাকা প্রতিকেজি দরেও বিক্রি হয়েছে। সেই নিরিখে দাম অনেকটা কমেছে। তবে এমাসে পেঁয়াজের দাম বেশি বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথমে ৩০-৩৫ টাকায়,দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেও ওই দাম ৪০ টাকা কেজি ছিল।
কেন লঙ্কা-পেঁয়াজের দামের পারদ এতটা বেড়েছে? ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম। স্থানীয়ভাবে লঙ্কার উৎপাদন এবারের বর্ষায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অন্যদিকে বর্ষাকালীন স্থানীয় পেঁয়াজ এখনও বাজারে আসেনি। তারওপর ভিনরাজ্য থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমেছে। সবমিলিয়েই পাইকারি বাজারে লঙ্কা-পেঁয়াজ দুইয়ের বাজার চড়া। খুচরো বাজারে সেই প্রভাব পড়ছে। কোচবিহারের দেশবন্ধু মার্কেটের এক ব্যবসায়ী চঞ্চল দে বলেন, “ গত সোম,মঙ্গলবারে আমরাই খুচরো ৩৮-৪০ টাকা খুচরো দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। তিনদিনের মধ্যে পাইকারি বাজারেই দাম বেড়ে ৪৪-৪৫ টাকা হয়েছে।তাই খুচরো বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে।” ভবানীগঞ্জ বাজারের পাইকারি আনাজ ব্যবসায়ী, জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “ পঞ্জাব,মহারাস্ট্র, মধ্যপ্রদেশে বাজারে যোগান কমায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব স্থানীয় বাজারেও পড়ছে। দুর্যোগ,সংরক্ষণ সমস্যার মতো নানা কারণ রয়েছে বলে শুনেছি।”
কোচবিহার
লঙ্কা- ১০০ টাকা
পেঁয়াজ-৫০ টাকা
(প্রতি কেজি)
হলদিবাড়ি
লঙ্কা-৬৫-৮০ টাকা (প্রতি কেজি)
উদ্যান পালন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে বছরের একাধিক মরসুমে প্রায় ৭০০ হেক্টর এলাকায় পেঁয়াজ চাষ হয়।তাতে অবশ্য চাহিদা মেটেনা। লঙ্কার বাজারেও ভিনরাজ্যের আমদানির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। বর্ষা, দুর্যোগে ভিনরাজ্যের পাশাপাশি স্থানীয় চাষাবাদে ক্ষতি হয়েছে। দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক দীপক সরকার বলেন, “ অক্টোবরের শুরুতে স্থানীয় পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে। তখন দাম কমবে বলে আশা। শীতের স্থানীয় লঙ্কা এলেও যোগান বাড়বে।”
তাতেও ক্রেতাদের অনেকের চিন্তা কমছেনা।কয়েকজনের কথায়, পেঁয়াজ, লঙ্কা শুধু নয় বেগুন, ঝিঙে,মূলো,বাঁধাকপির মতো অন্য আনাজের দাম চড়া।পুজোর মুখে পকেটে টান বাড়ছে। কালোবাজারির জেরে দাম চড়ছে কিনা, দেখা দরকার।ব্যবসায়ীদের দাবি, জেলায় তেমন ব্যাপার নেই।