ফাইল চিত্র।
কেউ ভাবছেন দলের ভিত নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে, চেপে ধরার এটাই সময়। কেউ ভাবছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের ভাল ফলের সম্ভাবনা কম। তাই অপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত (যাকে ইংরেজি প্রবচনে বলে ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’) নিতে চাইছেন তাঁরা। এমন এক সময়ে আজ, মঙ্গলবার কোচবিহার সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, দুপুরের পরে মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার বিমানবন্দরে হেলিকপ্টারে নামবেন। সেখানেই কনফারেন্স হলে জেলার বিধায়ক এবং কয়েক জন শীর্ষ নেতাকে নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাবেন। পরে তাঁর শিবযজ্ঞের শিবমন্দিরে যাওয়ার কথাও রয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর ওই সফরসূচি নিয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। সেজে উঠেছে কোচবিহার সার্কিট হাউস। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করে আছে কোচবিহার।”
উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে এত দিন পরিচিত ছিল কোচবিহার। কিন্তু লোকসভা ভোটে সেখানে বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। সেই ধারা অব্যাহত আছে বলেই বিজেপির দাবি। তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগও উঠেছে বারে বারে। সম্প্রতি কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী তৃণমূল ছে়ড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে এবারের বিধানসভায় এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে দল। দলকে চাঙ্গা করতেই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর এই সফর। তাঁর সফরের আগে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ঘুরে গিয়েছেন কোচবিহারে। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরেও একাধিক বিধায়ক অখুশি। এক বিধায়ক হুঁশিয়ারির সুরেই শুনিয়েছেন, তিনি এ বারে দিল্লি যেতে পারেন। আর এক সংখ্যালঘু নেতা জানিয়েছেন, এ বারে টিকিট না পেলে অন্য দলের প্রার্থী হবেন। এর মধ্যে মিম তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে বলেও খবর। এমন পরিস্থিতি কী করে সামাল দেবেন নেত্রী, সে দিকেই সকলে তাকিয়ে। তাই কোচবিহারে পৌঁছে আগে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বসে নেবেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ওই বৈঠকে কড়া বার্তা দিতে পারেন দলনেত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, “দিদির ভিত যে নড়বড়ে হয়ে যায়নি, সেটাই বুঝিয়ে দেবেন তিনি।”
এই সফরকে কাজে লাগিয়ে কিছু প্রশাসনিক কাজও করে নিতে চাইছেন তিনি। কোচবিহার এমজেএন সরকারি মেডিক্যাল কলেজের যাত্রা বেশ কিছু দিন আগেই শুরু হয়েছে। এই সময়ে মেডিক্যাল কলেজ ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেই ভবনের উদ্বোধন করতে পারেন তিনি।
নারায়ণী ব্যাটালিয়নের অফিস উদ্বোধন-সহ বেশ কিছু প্রকল্পেরও উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় রাসমেলা ময়দানে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেই সভায় লোক আনার জন্যে দু’হাজারের বেশি বাস, গাড়ি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”