বিয়ের দাবিতে ধর্না বরখাস্ত শিক্ষিকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ছেলের প্রেমিকাকে বৌমা করে ‘ঘরে তুলতে’ যথেষ্ট আপত্তি আছে। কারণ, ছেলের বাড়িতে মেয়ের একলা চলে আসা না কি তাঁর পছন্দ নয়। তবে ‘ভরা বাদর’ দেখে ‘শূন্য মন্দির’ পূর্ণ করার দাবিতে বাড়ির সামনে ধর্নায় বসা তরুণীকে ঘরে ডেকে নিয়েছেন প্রেমিকের মা। কোচবিহারের মাথাভাঙার নিশিগঞ্জের তরুণ-তরুণীর বিয়ের দাবিতে ‘টানাপড়েনে’র মধ্যেও এমন ছবি অবাক করেছে সকলকে। প্রেমিকের বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে ঠাঁই পাওয়া ওই তরুণী অবশ্য পেশায় নিশিগঞ্জ কলেজের অতিথি শিক্ষক প্রণব গোস্বামীর মনে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করার দাবিতে অনড়।
মাথাভাঙার বাসিন্দা ওই তরুণীর দাবি, প্রণবের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক। তাঁর দাবি, ‘‘আমার চাকরি যত দিন ছিল তত দিন ও (প্রণব গোস্বামী) আমার সঙ্গে ঘুরেছে। আমাকে ও বাড়িতে আসতেও বলেছে, বিয়ে করবে বলে। কিন্তু যবে থেকে আমার চাকরি গিয়েছে তবে থেকে ও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। ও আমাকে সোমবার আসতে বলেছিল। বলেছিল, ‘মঙ্গলবার তোমাকে বিয়ে করব।’ ওর সঙ্গে ঘুরতে দেখে আমাকে বাড়িতে মারধর করেছিল। ও সেটা শুনে আমাকে চলে আসতে বলে। কিন্তু আমি বাড়িতে আসার পর থেকে ও বেপাত্তা। এখন ও অনেক রকম মিথ্যা কথা বলছে। আমি যখন এখানে আসি তখন আমি জানতাম না যে আমার চাকরি চলে যাবে। হয়তো চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার জন্যই ও আমাকে আর মেনে নিতে চাইছে না।’’ নিজের দাবিতে অনড় ওই তরুণী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ও (প্রণব গোস্বামী) যত দিন না আসবে তত দিন এখানে থাকব।’’
তরুণীর বক্তব্য শুনে ফুঁসে উঠেছেন প্রণবের মা অপর্ণা। কড়া গলায় তিনি দাবি করেছেন, ‘‘আমার ছেলে এখানে নেই। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছে। কিন্তু আমরা ওই মেয়েকে মেনে নেব না। আমরা কখনও দেখিনি মেয়ে একলা একলা ছেলের বাড়িতে চলে এসেছে। চাকরি চলে না গেলে মেয়ে আসত না আমাদের বাড়ি। আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের মাত্র ১০-১২ দিনের সম্পর্ক। ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক নেই।’’
প্রণবের মা অর্পণা যখন এ সব বলছেন তখন বেশ কয়েক বার প্রতিবাদ করতে শোনা গিয়েছে পাশে বসে থাকা ওই তরুণীকে। প্রণবের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে হওয়া কথাবার্তা প্রকাশ্যে আনার দাবিও করেছেন তিনি। অবশ্য তরুণী বলছেন, ‘‘সোমবার আমি এই বাড়িতে এসেছি। তার পর থেকে ওর (প্রণব গোস্বামী) পরিবারের লোকজন আমাকে দেখভাল করছে।’’
প্রণবের পরিবারের লোকজনও অবশ্য একই দাবি করেছেন। অপর্ণা জানিয়েছেন, বর্ষার দিনে বাইরে থাকলে অসুবিধা হতে পারে। তাই তরুণীকে ঘরে ডেকে নেওয়া হয়েছে।
এ সব শুনে অবশ্য নিন্দকরা বলছেন, ‘‘ঘরের গন্ডগোল যাতে বাইরে না আসে সে জন্যই ওই তরুণীকে ঘরে ডেকে নেওয়া হয়েছে।’’