রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। —ফাইল চিত্র
উদয়নের গুহের পরে এবারে কাটমানির অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ওই অভিযোগ করেন বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। তিনি উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবাশিস মজুমদারের একটি ফেসবুক পোস্ট উল্লেখ করে দাবি করেন, ২০১৪-১৫ সালে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। সেই ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপি সভানেত্রী। দেবাশিসবাবুও ফোনে জানিয়ে দেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথকে নিয়েই তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। বর্তমানে দেবাশিস বিজেপির ইন্টেলেকচুয়াল সেলের সদস্য। এমন অভিযোগে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের নামে মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি বলেন, “যারা এমন অভিযোগ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে।”
দেবাশিস তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘পুরো উত্তরবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে তিনি যে পরিমাণ কাটমানি তুলেছেন এবং ইউবিকেভিতে ওঁর তাঁবেদারি করা শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী বা কিছু আধিকারিকরা ওঁকে যে পরিমাণ কাটমকানি তুলতে সাহায্য করেছেন তা অনস্বীকার্য।…..’ তিনি ওই পোস্টে অবশ্য কারও নাম উল্লেখ করেননি। পরে দেবাশিস অবশ্য দাবি করেন, তিনি রবীন্দ্রনাথবাবুকে উদ্দেশ্য করেই ও কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, তিনি সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অধিকর্তা ছিলেন। তিনি পুরো বিষয়টি জানলেও তখন মুখ খুলতে পারেননি। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন দেবাশিস। দেবাশিস বলেন, “এখন আর বলতে কোনও বাধা নেই। তাই লিখেছি।” তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বিজেপিতে গিয়ে চক্রান্ত করেই এমন অভিযোগ সামনে এনেছেন দেবাশিসবাবু।
এ দিন বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাজ্যের তপশিলি জাতিভুক্তদের জন্য সংরক্ষিত আসনে ভিন্ রাজ্যের তপশিলি ভুক্তদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সাধারণ শ্রেণির প্রার্থীদের নেওয়া হয়েছে। এমনকি ‘হান্ড্রেড পয়েন্ট রোস্টার এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের নিয়োগ নিয়ে তথ্য চাওয়া হলেও, বিশ্ববিদ্যালয় কিছু জানায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালের একটি নিয়োগে পাঁচটি ক্ষেত্রে ভিন্ রাজ্যের তপশিলিদের সুযোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সে সময় যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা ওই নিয়ম বা আইনের বিষয়ে জানতেন না। পরে ব্যাকওয়ার্ড কমিশনকে জানিয়ে নতুন করে আরও পাঁচটি শূন্য আসন সংরক্ষিত করা হয় এবং ওই আসনগুলি জেনারেল করা হয়েছে।” নিয়ম মেনেই তথ্য জানার অধিকার আইনে সব জানিয়ে দেওয়া হবে।