কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। — ফাইল চিত্র।
কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে বৃহস্পতিবার একটি সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়িতে অস্ত্র মজুত রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই নিশীথের পক্ষে সওয়াল করলেন ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজ়েশন’ (কেএলও)-এর বিদেশ সচিব পাভেল কোচ। এক জন ‘জঙ্গি নেতা’ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর হয়ে কথা বলায় একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অবশ্য উদয়নের বক্তব্য নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। উদয়ন কেন পুলিশে অভিযোগ না জানিয়ে জনসভায় এমন কথা বলছেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। শুক্রবার উদয়ন বলেন, “কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষীরা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে রাখেন। পুলিশ সেখানে যেতে পারে না। গেলেই সব প্রকাশ্যে আসবে। আমরা পুলিশকে যা জানানোর, জানিয়েছি।”
বিজেপির দাবি, এ সবের পিছনে ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ স্পষ্ট। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি-কেএলও-র যোগ রয়েছে তা আবারও প্রমাণ হল। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “রাজনৈতিক অভিযোগ নিয়ে কিছু মন্তব্য করা ঠিক নয়।”
উদয়ন বৃহস্পতিবার দাবি করেছিলেন, “কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে অস্ত্র, এমনকি, বোমা-বন্দুক মজুত আছে। ওই বাড়ি দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থল। পুলিশকে তল্লাশি চালানোর অনুমতি দেওয়া হলে সব উদ্ধার হবে।” তিনি সেখানে আরও দাবি করেন, জেলার যেখানে অশান্তি-বোমাবাজি হয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি থেকেই তা গিয়েছে। দিন কয়েক আগে, দিনহাটার শুকারুরকুঠিতে একটি সভায় নিশীথের ‘দাড়ি-গোঁফ’ উপড়ে নেওয়ার মতো ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান উদয়ন। এই সভায় তিনি অবশ্য সে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। এ বিষয়ে নিশীথের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জবাব মেলেনি মেসেজের। নিশীথের ব্যক্তিগত সহায়ক ফোনে দাবি করেন, মন্ত্রী এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চান না।
তবে, শুক্রবার একটি ভিডিয়ো বার্তায় কেএলওর বিদেশ সচিব পাভেল কোচ বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা গভীর ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক চক্রান্ত। কিছু দিন আগে গ্রেটার নেতা অনন্ত রায় (মহারাজ) ও জন বার্লার উপরে মামলা দেওয়া হয়েছে।” কোচ-রাজবংশীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
তৃণমূলের প্রাক্তন কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমরা আগেও বলেছি, কেএলও-র পিছনে বিজেপি রয়েছে। আবার তা প্রমাণিত হল।” বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “বিজেপি কোথাও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দেয় না। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কে, কোথায়, কী বলল, তার দায় আমাদের নয়।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের সংযোজন, “যারা চাকরি-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাদের মুখে কোনও কথা মানায় না।