Mamata Banerjee at North Bengal

পাট্টা নিয়ে মমতার ঘোষণায় বিতর্ক চলছেই

আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে রবিবার সরকারি সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, চা শ্রমিকদের শুধু জমির পাট্টা দেওয়াই নয়, সেই জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য অর্থও দেবে রাজ্য সরকার।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী, সৌম্যদ্বীপ সেন

আলিপুরদুয়ার, কালচিনি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:২০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘চা সুন্দরী’র বদলে বাগান শ্রমিকদের জমির পাট্টা দিয়ে সেখানে বাড়ি বানানোর জন্য এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন পরিকল্পনাকে ঘিরে বিতর্ক চলছেই। আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ঘোষণাকে ঘিরে রবিবারই সরব হয়েছিল বিজেপি। এ বার সেই ঘোষণার সমালোচনায় সুর চড়াল বামেরাও। বিরোধীদের বক্তব্য, চা সুন্দরী প্রকল্পে প্রতি আবাসন-পিছু রাজ্য সরকারের খরচ হয় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকারও বেশি। সেখানে মমতার রবিবারের ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে শ্রমিকদের বাড়ি বানানোর জন্য দেওয়া হবে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা। যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই মানবিক পরিকল্পনাকে বোঝার ক্ষমতা এ রাজ্যের কোনও বিরোধী নেতাদের নেই। যদি তাঁরা এই পরিকল্পনা বুঝতেন, তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করতেন না। মুখ্যমন্ত্রীর এই পরিকল্পনায় গোটা চা বলয়ের শ্রমিকেরা উপকৃত হবেন। সেই শ্রমিকেরাই আগামী দিনে বিজেপি ও সিপিএমকে বুঝিয়ে দেবে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাবনা কতটা সঠিক।”

Advertisement

আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে রবিবার সরকারি সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, চা শ্রমিকদের শুধু জমির পাট্টা দেওয়াই নয়, সেই জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য অর্থও দেবে রাজ্য সরকার। সরকারি ওই সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, চা সুন্দরী প্রকল্প তাঁর সরকার করেছে। এই প্রকল্পে এক হাজারের উপর উপভোক্তা বাড়িও পেয়েছেন। আরও অনেকে পাবেন। কিন্তু তাঁর সরকার ভাবছে, চা সুন্দরী না দিয়ে যে জমিতে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকাও পাট্টার সঙ্গে দেওয়া হবে। তা হলে প্রকল্পের উপভোক্তারাই ঘর বানিয়ে নেবেন। এই পরিকল্পনা আগামী দিনে বাস্তবায়িত করার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর নতুন এই ঘোষণা যথেষ্ট সদর্থক। তাঁদের যুক্তি, বন্ধ কিংবা কিছুটা অচলাবস্থায় থাকা জেলার চা বাগানগুলোতেই চা সুন্দরী প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। যাতে সেই শ্রমিকেরা অন্তত মাথার উপরে ছাদ পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত না হন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নতুন পরিকল্পনায় চালু বাগানের
শ্রমিকেরাও উপকৃত হবেন। তবে তা মানতে নারাজ বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে ঘিরে এ দিনও নিজেদের সুর চড়া রখেছে গেরুয়া শিবির। দলের মাদারিহাটের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা এ দিনও
বলেন, “চা সুন্দরী প্রকল্প ধুলোর সঙ্গে মিশে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় চা শ্রমিকদের ঘর বানিয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক কিশোর দাসও বলেন, “চা সুন্দরী প্রকল্প পুরোপুরি ব্যর্থ। সে জন্যই
ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্থেই চা শ্রমিকদের ঘর বানিয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্য জুড়ে যে হারে দুর্নীতি চলছে, তাতে বাড়ি বানানোর জন্য চা শ্রমিকদের কাছে সেই অর্থ আদৌ পৌঁছাবে কি না, তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement