ত্রিপলের ছাউনির নীচে সংসার। সেখানে শীতে জুবুথুবু হয়ে পরিবার নিয়ে দিন কাটছে পুরাতন মালদহের পূর্ণিমা সিংহের। বছর খানেক আগে, সরকারি আবাস প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা পেয়ে বাঁশের চাটাইয়ের উপরে টালির ছাউনি দেওয়া ঘর ভাঙেন তিনি। সে টাকায় ইট দিয়ে ভিতও গড়েছেন। পরের কিস্তির টাকা না পেয়ে ত্রিপলের নীচে অস্থায়ী ঘরেই সংসার চলছে তাঁর। পূর্ণিমার আক্ষেপ, “পাকা ঘরের স্বপ্ন নিয়ে ঘর ভেঙেছিলাম। সে ঘর ভেঙে বৃষ্টিতে ত্রিপলের নীচে পরিবার নিয়ে কাটিয়েছি। জানি না আর কত দিন, এ ভাবেই কাটাতে হবে!”
তাঁর মতোই ত্রিপলের নীচে বা ভাড়া বাড়িতে দিন কাটাচ্ছেন ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ শহরের প্রায় পাঁচ হাজার ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের’ উপভোক্তা। পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, কেন্দ্রের ঘর প্রকল্পে শহরের উপভোক্তাদের তিন লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা চার কিস্তিতে দেওয়া হয়। এর মধ্যে, রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই সরকারের বরাদ্দ থাকে। এক বছর আগে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকে আর বরাদ্দ মিলছে না, দাবি উপভোক্তাদের। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। পুরসভার এক কর্তা বলেন, প্রথম কিস্তির টাকায় উপভোক্তাদের বাড়ির ভিত তৈরি করতে হয়। সে ছবি দেখে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। ইংরেজবাজারের উপভোক্তা গোপাল সাহা বলেন, “ঘর ভেঙে এক বছর ধরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছি। ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। প্রকল্পের সমস্ত টাকাই মনে হচ্ছে বাড়ি ভাড়া দিতেই শেষ হয়ে যাবে!”
পুরাতন মালদহের পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রের সরকার বরাদ্দ না-দেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে।” সম্প্রতি, কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার বকেয়া টাকা নিয়ে উপভোক্তাদের একাংশকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আন্দোলন করেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “রাজ্য সরকার সাধ্য মতো চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলার মানুষকে বঞ্চনা করছে।” বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু পাল্টা বলেন, “তৃণমূলের দুর্নীতির জন্য সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। মানুষ সবটাই জানেন।”