প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে ক্ষমতা বদলের সঙ্গে সঙ্গে সব সময় রং বদলেছে শিলিগুড়ির এনজেপিতে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যতম বড় স্টেশন এনজেপিকে কেন্দ্র করে একসময়ে বামদের দীর্ঘদিনের দুর্গ গত ন’বছর ধরে তৃণমূলের ঘাঁটি হয়েছে। কিন্তু গত দু’বছরে এনজেপিতে পদ্মফুল ফোটা শুরু হতেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের মাটি দখলে রাখতে নেমেছে তৃণমূল। পাল্টা গেরুয়া শিবিরও জমি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া। এই টানাটানি থেকেই শুক্রবার দুপুরের সংঘর্ষ, মানছেন দু’দলের নেতারাই।
রেল ও পুলিশ সূত্রের খবর, বাম আমল থেকে এলাকায় পেশিশক্তি কায়েম হয়েছে। তারপরে তৃণমূল এসেছে। এখন বিজেপিও। ঘাসফুল, লাল শিবিরের অনেকেই এখন বিজেপিতে। প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী থেকে বাম শ্রমিক নেতা ধর্মরাজ রায় বিজেপিতে যেতেই এনজেপির ভরকেন্দ্র নড়তে শুরু করেছে। এখন ঘাসফুলের হয়ে দুর্গ সামলানোর চেষ্টায় আইএনটিটিইউসি ব্লক সভাপতি প্রসেনজিত রায়।
২০১৬ তে এলাকার একছত্র নিয়ন্ত্রক বলে পরিচিত বিজন নন্দী বা জন নন্দী মারা যেতেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। বিজনবাবু একসময় বাম শিবিরের লোক ছিলেন। তিনি মারা যেতেই তাঁর ভাই জয়দীপ এবং ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত প্রসেনজিতের মধ্যে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি চলে। বোমাবাজি, দলীয় দফতরে আগুন, গাড়িতে হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ গত কয়েক বছরে এনজেপিবাসী সব দেখেছেন। তবে সবই ছিল ঘাসফুলের অন্দরে। জয়দীপ, ধর্মরাজরা বিজেপিতে আসতেই শুরু হয়েছে এলাকা নিয়ন্ত্রণের লড়াই।
অনেকেরই অভিযোগ, ট্রাক সিন্ডিকেট, টোটো-অটোর সংগঠন, গাড়ির স্ট্যান্ড, রেল ও ইন্ডিয়ান অয়েল, একাধিক শ্রমিক সংগঠনকে কেন্দ্র করে এনজেপিতে সিন্ডিকেট রাজ চলে। যার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলে লড়াই। ভোটের আগে গোলমাল বাড়বে বলে আশঙ্কা পুলিশের একাংশেরই। মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আমরা অশান্তি করি না। করতেও দেব না।’’ আর বিজেপি নেতা রথীন বসুর কথায়, ‘‘পিঠ দেওয়ালে। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হবেই।’’ শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সুরক্ষিত রাখতে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’