অপেক্ষা: কেউ ফিরেছেন পদাতিকে। কেউ আবার শ্রমিক স্পেশ্যালে। এনজেপির সামনে এক জায়গাতেই বাস-গাড়ির অপেক্ষায় তাঁরা।মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাই সত্যি হল। বিশেষ পদাতিক এক্সপ্রেসের যাত্রীদের সঙ্গে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের যাত্রীদের মেলামেশা আটকানো গেল না এনজেপি-তে।
দীর্ঘদিন পর ফের শুরু হয়েছে যাত্রী ট্রেন পরিষেবা। কলকাতা থেকে মঙ্গলবার সকালে এনজেপি এসে পৌঁছয় পদাতিক এক্সপ্রেস। সেই সময় অন্য গন্তব্যগুলি থেকেও ট্রেন এসে পৌঁছয় সেখানে। স্বাভাবিক ভাবেই প্ল্যাটফর্ম ও ফুটব্রিজে যাত্রীরা পাশাপাশি হেঁটে স্টেশন থেকে বার হয়েছেন। সেখানে সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না বলেই দাবি করেছেন দুই ট্রেনের যাত্রীদের একাংশ। কলকাতা রেড জ়োন। পদাতিক সেখান থেকে এসেছে। আবার শ্রমিক ট্রেনগুলিও এমন সব জায়গা থেকে এসেছে, যার মধ্যে করোনা কবলিত রাজ্য রয়েছে। উভয় ট্রেনের যাত্রীদের একটি বড় অংশের দাবি, এই দুই পক্ষে ঘেঁষাঘেঁষি হওয়ায় যে কোনও লোকই করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি, কলকাতা থেকে আসা যাত্রীদের বেরনোর সময় কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়নি বলে দাবি যাত্রীদের। তাঁদের বক্তব্য, কাউকেই কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়নি কেউ।
দু’টি ট্রেনের মধ্যে ব্যবধান রাখার আশ্বাস দিয়েছিলেন রেলকর্তারা। কিন্তু তা বাস্তবে হল না। এই আশঙ্কাই ছিল সকলের। প্ল্যাটফর্মে এবং ফুটব্রিজে কাছাকাছি চলে আসেন যাত্রীরা।
যদিও রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, স্টেশনে একটি ট্রেন ঢুকে যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর অন্য ট্রেনের যাত্রীরা নেমেছেন।
বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পদাতিক এসে পৌঁছয় এনজেপি-তে। ঠিক তার আগে-পরে এনজেপি-তে আসে দুই করোনা কবলিত এলাকা গুজরাত এবং মুম্বই থেকে আসা দুটি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। শ্রমিক স্পেশ্যালে ফেরা জিটিএ এলাকার বাসিন্দাদের নাম নথিভুক্তকরণের কাজ চলছে ফুটব্রিজ থেকে বেরিয়ে আসা র্যাম্পের গোড়াতেই। সেখান দিয়েই পদাতিকের যাত্রীরাও বেরিয়ে গাড়ি ধরেন।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির সভাপতি দীপককুমার মোহান্তি বলেন, ‘‘দুই ট্রেনের যাত্রীদের পৃথক করে কেন দ্বিতীয় ফুটব্রিজ (পার্সেল ব্রিজ) ব্যবহার করা গেল না? কেনই বা ফুটব্রিজে নিদেনপক্ষে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দু’টি ট্রেনের যাত্রীদের আলাদা করে বার করা হল না? ঝুঁকি তো দু’পক্ষেই রয়ে গিয়েছে।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘দুটি ট্রেনের মধ্যে ব্যবধান রেখেই যাত্রীদের নামানো হচ্ছে। যাতে তাঁরা মিশে না যান, তার চেষ্টা সব সময়ই রেল করছে।’’ এনজেপি-র ক্ষেত্রে তা মানা গেল না কেন? এনজেপি-র স্টেশন অধিকর্তা রাজীবকুমার ঝা বলেন, ‘‘যাত্রী স্পেশ্যাল এবং শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের যাত্রীদের জন্য আলাদা করে দাঁড়ানোর চিহ্ন আঁকা হয়েছে। দুই পক্ষকেই অনেক দূরত্বে বসানো হয়েছে। কিছুটা দূরত্ব যাত্রীদের নিজেদেরও বজায় রাখতে হবে। রেল তার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।’’
এনজেপি সূত্রে খবর, শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলি থেকে যে হেতু মানুষ নেমে পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে, তাই একটি গেট দিয়েই তাদের যাতায়াত সীমিত রাখতে চায় রেল।