প্রতীকী ছবি
লাকি ড্র! ভাগ্য ভাল থাকলে তাতে ‘ক্যাশ প্রাইজ’ বা নগদ টাকা জেতার সুযোগ তো রয়েইছে। এমনকি, দার্জিলিঙে বিনা খরচে দুই রাত তিনদিন থাকার সুযোগও মিলে যেতে পারে। এর বাইরে আরও অনেক আকর্ষণীয় পুরস্কার থাকছে। এই লাকি ড্র-য়ে অংশ নিতে কোনও লটারি এজেন্টের দোকানে যেতে হবে না। তার বদলে আসন্ন পুর নির্বাচনের আগে আলিপুরদুয়ার শহরের নানা সমস্যা ও তাঁর প্রতিকার নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। প্রশ্নকর্তা জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব!
মঙ্গলবার কংগ্রেসের যুব সংগঠনের তরফে দু’মিনিটের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে একটি লিফলেটও। ভিডিয়ো ও লিফলেটের দু’টিতেই রাখা হয়েছে চারটি প্রশ্ন। ভিডিয়োর মাধ্যমে যার উত্তর একটি নির্দিষ্ট হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরে পাঠাতে অনুরোধ করেছেন যুব কংগ্রেসের নেতারা।আলিপুরদুয়ার জেলা যুব কংগ্রেসের এই ভিডিয়োয় এবং লিফলেটে থাকছে এইসব প্রশ্ন। আপনার মতে বর্তমানে আলিপুরদুয়ার শহরের কী কী সমস্যা রয়েছে? আলিপুরদুয়ারকে নিয়ে আপনার কী কী স্বপ্ন রয়েছে? আপনি কী রকম আলিপুরদুয়ার শহর তৈরি করতে চান? আপনি যদি পুরসভার চেয়ারম্যান হতেন তাহলে কীভাবে এই সব সমস্যার সমাধান করতেন? এইসব প্রশ্নের উত্তর দিলে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ পুরস্কার, দার্জিলিঙে বিনা খরচে দু’রাত ও তিন দিন হোটেলে থাকার সুবিধা মিলতে পারে। লাকি ড্রয়ের মাধ্যমে আরও বেশ কিছু পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে সংগঠনের তরফে।
কিন্তু যুব কংগ্রেসের এই ঘোষণা বা ভিডিয়ো প্রকাশের পরই পুরসভা নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার ব্যাপক বিতর্ক দানা বেঁধেছে আলিপুরদুয়ারে। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরভোটের আগে এটা একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে অগণতান্ত্রিক আচরণ। কারণ আলিপুরদুয়ারবাসী লোভী নন।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘কংগ্রেস আলিপুরদুয়ার পুর নির্বাচনে কোনও ফ্যাক্টর নয়। তার পরেও ওদের যে নৈতিকতার কোনও বিচার নেই, তা তাদের এই ঘোষণাতেই স্পষ্ট।’’
তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের অনেকেই এভাবে পুরস্কার ঘোষণার মাধ্যমে কংগ্রেস আলিপুরদুয়ারের শহরের ভোটারদের কেনার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। যার উত্তরে যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার শহরের উন্নতি চাই। সেই উন্নতি কী করে হতে পারে সে ব্যাপারে শহরবাসীর মতও জানতে চাই। শহরের উন্নতিতে সকলে যাতে এগিয়ে আসেন, তাই এই উদ্যোগ।’’
সরাসরি না বললেও শহর কংগ্রেসের অনেকেই জানান, শহরে দলের অবস্থা একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। আগের পুরভোটে কিছু আসন পেলেও গত লোকসভা নির্বাচনে পুরসভার নিরিখে শোচনীয় ফল দলের। সেই ভোটব্যাঙ্কের কিছুটা অন্তত ফেরাতে মরিয়া কংগ্রেস এখন এ ভাবেই জনসংযোগের পথে নেমেছে।