আবাস যোজনার বাড়ি। ছবি সংগৃহীত।
গত দু’সপ্তাহ ধরে উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবাস প্লাস উপভোক্তাদের দাবির সত্যতা যাচাইয়ের সমীক্ষা চলছে। ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে উপভোক্তাদের তালিকায় যোগ্য অনেকের নাম না থাকার অভিযোগে গত কয়েকদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের কর্মী ও কর্তাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সেই তালিকায় নাম না থাকা জেলার তফসিলি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের জন্য ওই প্রকল্পে ঘর পাওয়ার আবেদনের একটি ফর্ম সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযোগ, জেলা জুড়ে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা তফসিলি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের সেই ফর্ম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওদের কাছে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের চাপানউতোর চরমে উঠেছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বর্তমানে চলতি আর্থিক বর্ষে জেলায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবাস প্লাস উপভোক্তাদের তালিকায় নতুন করে কোনও উপভোক্তার নাম অন্তর্ভূক্ত করার সরকারি নির্দেশিকা নেই। মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘কিছু মানুষ ভুল বুঝে নয়টি ব্লকের বিডিও অফিসে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর পাওয়ার আবেদনের ফর্ম জমা দিচ্ছেন।’’
কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের অভিযোগ, পঞ্চায়ত নির্বাচনে জেলার নয়টি ব্লকে তফসিলি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের ভোট টানতে বিজেপি তাঁদের ভুল বুঝিয়ে তাঁদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর পাওয়ার ভুয়ো আবেদনপত্র বিডিওদের কাছে জমা করাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের ভুল নীতির জেরে চার বছর আগে জেলা জুড়ে অনেক দুঃস্থ পরিবারের নাম ওই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি। সরকারি ভাবে ওই প্রকল্পে ফের ঘর পাওয়ার আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু হলে দলের তরফে জেলার সমস্ত সম্প্রদায়ের গরিব পরিবারকে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হবে।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের অবশ্য দাবি, জেলার নয়টি ব্লকে তফসিলি বাসিন্দাদের ওই প্রকল্পে ঘর পাওয়ার আবেদনের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘‘তবে তরফে আগেই জেলার সমস্ত দুঃস্থ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর দেওয়ার দাবি প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে। বছর চারেক আগে তৃণমূলের নির্দেশে রাজ্য সরকারের কর্মীরা জেলার অনেক দুঃস্থ পরিবারের কর্তাদের নাম ওই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না করে তৃণমূলের বিত্তশালীদের নাম অন্তর্ভূক্ত করেছেন।’’