বঙ্গধ্বনি কর্মসূচিতে ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিভিন্ন জেলাতে বঙ্গধ্বনি যাত্রা শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। মালদহ জেলার বিভিন্ন এলাকাতে এই যাত্রায় নেমেছেন সেখানকার নেতারা। কিন্তু সেই যাত্রা ঘিরেও ঐক্যের ছবি দেখা গেল না মালদহ তৃণমূল কংগ্রেসে। বরং এই কর্মসূচিতে দ্বন্দ্বের ছবি আরও প্রকট হল সেখানে।
ইংরেজবাজার বিধানসভার বর্তমান বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ নিজের অনুগামীদের নিয়ে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করছেন গ্রামগঞ্জে। পাশাপাশি এই বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও নিজের অনুগামীদের নিয়ে পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করছেন। একই ছবি মানিকচক ব্লকেও। সেখানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাবিত্রী মিত্র মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে এই যাত্রা করছেন না। তিনিও তাঁর অনুগামীদের নিয়ে করছেন এই যাত্রা। আবার গৌড়চন্দ্র মণ্ডলও তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বঙ্গধ্বনিতে অংশ নিয়েছেন। জেলা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এমন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব।
মালদহ জেলাতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে অন্তর্কলহ সকলের জানা। মমতা এই দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য বারংবার নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও কমেনি নেতাদের নিজেদের মধ্যে বিবাদ। যদিও ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ দ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘সকলে মিলে রাজ্যের বেঁধে দেওয়া কর্মসূচি বঙ্গধ্বনি যাত্রা করা হচ্ছে।’’ সঙ্গে তাঁর সাফাই, তাঁকে বিধানসভার গ্রামীণ এলাকায় এই যাত্রা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কৃষ্ণেন্দুবাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ব্লক সভাপতি প্রতিভা সিংহ বলেছেন, ‘‘এই কর্মসূচি বর্তমান বিধায়কে করার নির্দেশ দিয়েছে দল।’’ মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা মানিকচক ব্লকের নেতা গৌড়চন্দ্র বলেছেন, ‘‘বিধানসভার প্রতিটি মানুষের কাজে তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান পৌঁছে দেওয়া একজন নেতা বা নেত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ভাগ করা হয়েছে।’’ দলের মধ্যে কোনও বিভাজন নেই বলেও দাবি তাঁর।
এই বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির মালদহ জেলা সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা নয়। এটি রঙ্গ-ব্যঙ্গধ্বনি যাত্রা। তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নেতাদের নিজেদের মধ্যে একে অপরকে ব্যঙ্গ করে রঙ্গ যাত্রা করা হচ্ছে।’’