প্রতীকী চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি’র মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে কোচবিহারে। গত তিন দিনে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে গোটা জেলায়। বৃহস্পতিবার রাতেও মাথাভাঙার ফুলবাড়িতে এক বিজেপি কর্মীর জমির ধান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেওয়ানহাটেও এক বিজেপি কর্মীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিন দিন আগে বলরামপুরে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। দু’জনকেই কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আবার ঘেঘিরঘাটে তৃণমূলের পতাকা খুলে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
শুক্রবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে ‘সিএএ ও এনআরসি’ বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। সেখানে পরে বিজেপি কর্মীদের জমায়েত হয়। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করছে। এ দিনও ফুলবাড়ি ও লক্ষ্মীরবাজারে তৃণমূল মোটরবাইক মিছিল করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করে।’’ তিনি বলেন, “জমির ধান কেটে বাড়িতে জড়ো করেছিলেন আমাদের এক কর্মী। সেই ধান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এমন ভাবেই তৃণমূলের অত্যাচার চলছে।”
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের দাবি, ‘‘গত ছ’মাস ধরে গ্রামে গ্রামে অত্যাচার, লুঠ চালিয়েছে বিজেপি। এখন মানুষ প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। তাতেই মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি। বিজেপি তাদের কর্মীদের মিথ্যে অভিযোগ করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।” তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আজ, ২৮ ডিসেম্বর ও আগামিকাল ২৯ ডিসেম্বর কোচবিহারের সমস্ত ব্লকে বিক্ষোভ অবস্থান করবে দল। কৃষিমেলার কারণে অনেকেই একদিন আগে ওই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বলে জানান তিনি। এ দিন কোচবিহার-১ নম্বর ব্লকের ভেতরে ফেস্টুন টাঙিয়ে এনআরসি ও সিএএর প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। তাদের দাবি, বিডিও অফিস চত্বরে এ ভাবে ফেস্টুন টাঙিয়ে রাখা ঠিক নয়। তৃণমূলের কোচবিহার-১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি খোকন মিয়াঁ বলেন, “আমরা আইন মেনেই প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত করেছি।”