প্রতীকী ছবি।
এ বার নব্য ও আদি বিজেপি-র লড়াইয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে কোচবিহারে। জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা সিতাইয়ে দু’পক্ষের লড়াইয়ে ৪ জন জখমও হয়েছেন। শুধু তাই নয়, দলের অন্দরেও ওই বিষয় নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
নিশীথ প্রামাণিকের নাম সাংসদ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হওয়ার দিনই বিক্ষোভ হয়েছিল বিজেপি’তে। নিশীথ এক সময় যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার দাপুটে নেতা ছিলেন। পরে দল তাঁকে বহিষ্কার করলে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের যুব কর্মীদের একটি অংশ বিজেপি’তে চলে যায়। সাংসদ নির্বাচনে নিশীথ জয়ী হওয়ার পরে দল পরিবর্তনের হিড়িক শুরু হয়। আর তাতেই আদি ও নব্য বিজেপি-র মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন দলেরই একটি অংশ।
তবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “দলে নতুন ও পুরনোর কোনও বিষয় নেই। দুই এক জায়গায় ভুল বোঝাবুঝি থাকলেও তা বসে মিটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আসলে তৃণমূল চক্রান্ত করে আদি ও নব্য বিজেপির নাম দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গন্ডগোল তৈরি করছে।”
সাংসদ অবশ্য আগেই আদি ও নব্য বিজেপির দ্বন্দ্বের বিষয় উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দলে যোগদানের বিষয়টি পুরোপুরি দেখছেন জেলা নেতৃত্ব। তিনি বলেন, “এমন কোনও ব্যাপার নেই। কোথাও সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হলেই আলোচনায় মিটিয়ে নেওয়া হচ্ছে।” লোকসভা নির্বাচনের আগেই কোচবিহার তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত ছিল। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে টানা কয়েক বছর সবুজ ও লাল তৃণমূলের লড়াইয়ের অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে। যে ভাবে বর্তমানে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন দলের নেতা-কর্মীরা, একই ভাবে ২০১১ সালের পরিবর্তনের পর বাম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের একটি বড় অংশ। পরে অবশ্য ওই লড়াই মূল ও যুব তৃণমুলের মধ্যে চলে যায়।
জেলার অন্য অংশের মতো সিতাইতেও যুব তৃণমূল থেকে বিজেপি’তে যোগ দেওয়া কর্মীদের সঙ্গে পুরনো বিজেপি কর্মীদের লড়াইয়ের অভিযোগ ওঠে। আদাবাড়ির ডাউয়াবাড়িতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সিতাইয়ের বিজেপির পুরনো নেতা বলে পরিচিত প্রশান্ত বর্মণ অভিযোগ করেন, ‘‘পরিকল্পনা করেই বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলা চালানো হয়।’’ তিনি বলেন, “কয়েকজন বিজেপি-র পতাকা নিয়ে গোটা ব্লকে সন্ত্রাস তৈরি করছে। বিজেপি কর্মীদের উপরেও হামলা চলছে। দলীয় নেতৃত্বকে সব জানানো হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, নুর মহম্মদ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। নুর মহম্মদ প্রামাণিক পাল্টা দাবি করেন, ‘‘প্রশান্ত বর্মণ বিজেপির কেউ নন।’’ তাঁরা এক সময় যুব তৃণমূল করতেন সে কথা স্বীকার করেই তাঁর দাবি, সাংসদের অনুগামী হিসেবেই তৃণমূলে ছিলেন তাঁরা। পরে তাঁর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল বিধায়ক বিজেপি-র মধ্যে গন্ডগোল তৈরি করার জন্যেই প্রশান্তবাবুকে ব্যবহার করছে।” প্রশান্তবাবু সে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।